সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:০৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠকে বসে এই কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় ওই ছাত্রাবাসের একজন নিরাপত্তারক্ষী ও প্রধান ফটকের একজন নিরাপত্তারক্ষীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- রাসেল মিয়া ও সবুজ আহমদ। তারা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন বলে জানা গেছে। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান মাসুমের ছাত্রাবাসের সিট বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্য রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। গণিত বিভাগের একজন অধ্যাপককে প্রধান করে গঠিত এ কমিটিতে দুই হলের দুজন সুপারকে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে কেবল মাহফুজুর রহমান মাসুম আমাদের নিয়মিত ছাত্র ও ছাত্রাবাসে থাকে। তাই তার ছাত্রাবাসের সিট বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ডিএনএ টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী। অভিযোগকারীকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি নেয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক গৃহবধূ। সন্ধ্যায় তাদের কলেজ থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ৬-৭ জন নেতাকর্মী। এরপর দুজনকে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে স্বামীকে আটকে রেখে তার সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে তারা। খবর পেয়ে রাতে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার সকালে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত দু-তিনজনের বিরুদ্ধে শাহপরান থানায় মামলা করেন নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী।
মামলার আসামিরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাছুম, রবিউল হাসান, তারিকুল ইসলাম তারেক ও অর্জুন লস্কর। এদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। তবে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রঞ্জিত সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
গণধর্ষণের ঘটনার পর রাতভর ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও ছোরা উদ্ধার করে পুলিশ। তবে বিকেল পর্যন্ত আসামিদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।