এমসি ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: যা বললেন সেই রণজিৎ সরকার …
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষনের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকার। অথচ ধর্ষণ মামলার আসামি সবাই রণজিৎ সরকারের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী। এর মধ্যে প্রধান আসামি সাইফুর রহমানসহ অনেকের সাথেই জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের ছবি আছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে।
দীর্ঘদিন এমসি কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় অভিযুক্তদের কোনো পদ-পদবি নেই। কিন্তু কলেজের রাজনীতিতে তারা সক্রিয় ছিলেন। তাদের দাপটে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। যা খুশি তাই করে বেড়াতো গোটা এলাকায়। ওই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে নেতা হলো রবিউল, তারেক, রনি, সাইফুর, মাহফুজ ও অর্জুন। এরা একের পর এক অন্যায় করে বেড়াতো এলাকায়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ টু শব্দটি করতে সাহস পেত না। সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করে এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত। বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। যাদের প্রত্যেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা অ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকারের অনুসারী।
এবার নিজ অনুসারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকার। ধর্ষকদের বিরুদ্ধে নিজে কঠোর থাকবেন ও সবাইকে কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে রঞ্জিত সরকার লিখেন, এদের বিচারের জন্য পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিতে সবাই যার যার অবস্থান থেকে সোচ্ছার থাকবেন। নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের স্ট্যাটাসটি হবহু সুরমানিউজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—-
পুন্যভুমি সিলেটে এমন নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটবে তা আমাদের কল্পনাতীত ছিল,এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হায়েনাদের কর্মকান্ড কে হার মানিয়েছে,।
স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী কে নিয়ে স্বামীর সম্মুখে যারা ধর্ষণ করছে তারা মানুষ নয় হায়েনা
তাদের কোন দল,গোত্র, দেশ কিংবা মানুষ নামে পরিচয় থাকতে পারে না,
এই ন্যক্কার জনক ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর ভাষা হরিয়ে ফেলেছি
আমি আমার অবস্থান থেকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর থাকব, সবাইকে কঠোর থাকার আহবান জানাচ্ছি।
এদের বিচারের জন্য পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিতে সবাই যার যার অবস্থান থেকে সোচ্ছার থাকবেন।
নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির এক তরুণী স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসেন। এ সময় ছাত্রলীগকর্মী এম. সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনির নেতৃত্বে স্বামী ও স্ত্রীকে পার্শ্ববর্তী কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায় আসামিরা। পরে সেখানে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা।
এ সময় ছাত্রলীগকর্মীরা ওই তরুণীর স্বামীর প্রাইভেটকারও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের প্রাইভেটকার উদ্ধার করে। পরে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
ধর্ষণের ঘটনার পর রাতভর অভিযান চালালেও কোনও অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।