খুঁজে পায়না পুলিশ, ফেসবুকে সরব গণধর্ষণের আসামীরা: নিজেদের নির্দোষ দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৩:১১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে সিলেটসহ সারা দেশ। ইতিমধ্যে সিলেট নগরীতে এমন নৃশংস ঘটনায় প্রতিবাদ করছেন সর্বসাধারণ। এদিকে এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ওই তরুণীর স্বামী। কিন্তু এখনো কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। তবে মামলার আসামীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
পুলিশ খোঁজে না পেলেও ফেসবুকে সরব রয়েছে আসামীরা। শনিবার সকালেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে এই মামলার দুই আসামীকে। স্ট্যাটাসে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
গণধর্ষণের মামলার ৫ নম্বর আসামী রবিউল ইসলাম শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ফেসবুকে লেখেন-
সম্মানিত সচেতন নাগরিকবৃন্দ
আমি রবিউল হাসান। আমি এম সি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। আপনারা অনেকেই চিনেন, আমি কেমন মানুষ তা হয়তো অনেকেই জানেন। গতকাল এম সি ছাত্রাবাসে গনধর্ষনের সাথে, কে বা কারা আমাকে জড়িয়ে অনেক অনলাইন নিউজ করিয়েছেন, আমি এম সি কলেজ ছাত্র, কিন্তু আই হোস্টেলে কখনোই ছিলাম না, আমি বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমি যদি এই নির্মম গনধর্ষনের সাথে জড়িত নই, আমাদের পরিবার আছে।যদি আমি এই জঘন্যকাজের সাথে জড়িত থাকি তা হলে প্রকাশে আমাকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি কোনো ভাবেই এই কাজের সাথে জড়িত নই। সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি সত্য না যেনে আমাকে এবং আমার প্রানের সংঘটন ছাত্রলীগের নাম কোনো অপপ্রচার করবেন না।
এমসি বিশ্ববিদ্যালের ছাত্রাবাসে গনধর্ষণকারী সকল নরপশুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এর আগে এই মামলার ৬ নম্বর আসামী মাহফুজুর রহমান মাসুম ফেসবুকে লেখেন-
এরকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন। একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে। আল্লাহ আমাকে নির্দোষ প্রমান করবেন।
তবে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে আমাকে সুইসাইডের দিকে নিয়ে যাওয়া আপনাদের বিচার আল্লাহ করবেন। বাকি আসামীদের কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।
ফেসবুকে সরব থাকার পরও আসামীদের গ্রেপ্তার করতে না পারা প্রসঙ্গে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আমরা তাদের গ্রেপ্তারে সবধরণের চেষ্টা চালাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামীর সঙ্গে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়ে এক তরুণী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। রাতে ছাত্রাবাস থেকে এই দম্পত্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার সকালে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও তিনজনকে আসামী করে শাহপরাণ (রহ.) থানায় মামলা করেন ধর্ষিতার স্বামী।
মামলার আসামিরা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সাইফুর রহমান (২৮), রবিউল ইসলাম (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫) ও তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮) ।
এদের মধ্যে অর্জুন ও তারেক (২৮) বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানা গেছে। আসামিদের মধ্যে সাইফুরের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের দিরাইয়ে, মাছুমের কানাইঘাটে, অর্জুনের জকিগঞ্জে, রনির হবিগঞ্জে এবং তারেকের বাড়ি সুনামগঞ্জে।