যাচাই-বাছাইয়ে যাচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত দুই কমিটি
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরু:
যাচাই-বাছাইয়ে যাচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত দুই কমিটি। কেন্দ্রীয় একটি টিম দু’কমিটিই যাচাই করার পর চুড়ান্ত করে জমা দেবেন। এরপরই দেয়া হবে অনুমোদন। এ কারণে সহসাই ঘোষণা হচ্ছে না সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। তবে- জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত দুই কমিটি জমা পড়ার পর থেকে ঢাকামুখি সিলেটের নেতারা। বিশেষ করে পদ হারানো নেতারা ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রের কাছে তাদের মতামত জমা দিচ্ছেন। ঢাকায় অবস্থারনত সিলেট আওয়ামী লীগের এক নেতা গতকাল জানিয়েছেন- প্রতিদিনই সিলেটের নেতারা এসে তাদের লিখিত মতামত ও অভিযোগ জমা দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা সেগুলো জমা নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ১১ বছর পর গত ৫ই ডিসেম্বর সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। কথা ছিলো- স্বল্প সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ১৫ই নভেম্বরের মধ্যে সিলেট জেলা ও মহানগর পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। প্রস্তাবিত দুটি কমিটি জমা পড়ার পর থেকে সিলেটে এ নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ শনিবার বঞ্চিত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভ করা হয়।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত দুটি কমিটি জমার পর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত অন্তত ২০ নেতা ঢাকায় ছুটে যান। তারা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের নালিশ জমা দেন। পরে তারা বিকল্প একটি কমিটিও জমা দিয়েছেন। ওই কমিটির প্রথম সহ-সভাপতি করা হয়েছে ফয়জুল আনোয়ার আলাউরকে ও প্রথম যুগ্ম-সম্পাদক রাখা হয়েছে সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ দাশকে। এর বাইরে মহানগরের আরো একাধিক নেতাও তাদের অভিযোগ ও মতামত জমা দিয়েছেন। ফলে কেন্দ্রের কাছে মহানগর আওয়ামী লীগের বিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। সিলেট থেকে যারা বিকল্প কমিটি জমা দিয়েছেন তাদের বেশিরভাগই হচ্ছে কামরান ও মিসবাহপন্থি নেতা। এদিকে- জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাদ দেয়া, নেতাদের অবমূল্যায়ন করা এবং পছন্দের নেতাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির অন্তত ১৫ জন নেতা কেন্দ্রের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরে লিখিত দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন- সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত দু’কমিটি গত ১৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিকল্প কমিটি ও অভিযোগ জমা পড়েছে। স্পষ্ট হয়েছে কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। এ কারণে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে প্রস্তাবিত কমিটি যাচাই-বাছাই ও অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমে একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, একজন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও একজন কার্যকরী সদস্য রয়েছেন। এক্ষেত্রে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক রয়েছেন। এই টিম এখন সিলেটের প্রস্তাবিত দুই কমিটি পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই করবে। এরপর সেটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়া হবে। প্রয়োজনে ওই কমিটি ক্ষুব্ধ থাকা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায়ও বসতে পারেন।
সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বিতর্কিত, স্বাধীনতা বিরোধী ও দুর্নীতিবাজদের কমিটিতে স্থান না দেয়ার। কিন্তু কেন্দ্রে জমাপড়া প্রস্তাবিত দুই কমিটিতে এসব অভিযোগ অসংখ্য। এ কারণে তারা সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। ত্যাগী ও পরীক্ষিত অনেক নেতাকর্মীকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।