প্রেমের টানে কাঁটাতারের বাঁধা অতিক্রম করে ভারতীয় তরুণী এখন সুনামগঞ্জে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:০৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
প্রেমের টানে কাঁটাতারের বাঁধা অতিক্রম করে বাংলাদেশে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উত্তর কলাউড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার (২৭) বাড়িতে এসেছে মঞ্জুরা বেগম (২০) নামে ভারতের এক তরুণী। তিনি ভারতের আসাম প্রদেশের কামরুক জেলার চাংসারি থানার টাপার পাথার গ্রামের মুগুর আলির কন্যা।
কিন্তু কাঁটাতারের সীমানা বাধা হয়ে দাঁড়াল তাঁদের জীবনে। বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর খবর পেয়ে বিজিবি মঞ্জুরা বেগমকে আটক করে। পরে বিজিবি মঞ্জুরার নামে বিনা পাসপোর্ট ও অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশে প্রবেশ করার অপরাধে মামলা দিয়ে বুধবার রাতে দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশে বিনা অনুমতিতে পাসপোর্ট ছাড়া অবৈধ ভাবে প্রবেশ করায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং- ৮ তারিখ ১৬/৯/২০২০।
জানা যায়, গত পাঁচ বছর পূর্বে মামলায় আসামি হয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের আসামে যান সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উত্তর কলাউড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সাত্তার (২৭)। সেখানে সাত্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় ভারতের আসাম প্রদেশের কামরুক জেলার চাংসারি থানার টাপার পাথার গ্রামের মুগুর আলির মেয়ে মঞ্জুরা বেগমের। গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। সাত্তার দেশে ফিরে আসার পর মোবাইল-ইমো ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে চলে তাদের প্রেম। দীর্ঘ ৫ বছর পর প্রেমের টানে মঞ্জুরা বেগম ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে।
স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উত্তর কলাউড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সাত্তার ৫ বছর আগে তার এক বন্ধুর প্রেম সহযোগীতা করেন। সেই ঘটনায় মামলার আদামীর তালিকায় ছিলেন তিনি। তার বন্ধু জেল খাটে তখুন তিনি রেহাই পেতে পালিয়ে যান ভারতের আসামে। সেখানে প্রায় বছর খানেক বসবাস করায় মঞ্জুরা বেগমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তার। বছর খানেক পরে সাত্তার চলে আসে বাংলাদেশে। দেশে আসার পর সে বাহরাইন দেশে চলে যায়। বাহরাইন দেশে আছে প্রায় ৩ বছর ধরে। এর মধ্যে দুইজনের প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। ইদানীং মঞ্জুরা বেগমের বিয়ের জন্য প্রায় কয়েক জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে। এ বিষয়ে মঞ্জুরা সাত্তারকে জানায়। সাত্তারকে জানালে সাত্তার মঞ্জুরাকে তার বাড়ীতে বাংলাদেশে আসার ঠিকানা দেয়। সেই ঠিকানা অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশে চলে আসেন ওই ভারতীয় তরুণী। সাত্তারের ছোট ভাই ইমরান বর্ডার থেকে রিসিভ করে বাড়ি নিয়ে আসে। পরে মঞ্জুরা বেগমের সম্মতিক্রমে মোবাইলে বাহরাইনে অবস্থানরত সাত্তারের সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
কিন্তু কাঁটাতারের সীমানা বাঁধা হয়ে দাঁড়াল তাদের জীবনে। বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার দায়ে বোধবার দুপুর খবর পেয়ে বিজিবি আটক করে মঞ্জুরা বেগমকে। বিজিবি মঞ্জুরার নামে বিনা পাসপোর্ট ও অনুমতি ছাড়া দেশে প্রবেশ করার কারণে দোয়ারা থানায় একটি মামলা দিয়ে বুধবার রাতে দোয়ারাবাজার থানায় হস্তান্তর করেন।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি মোহাম্মদ নাজির আলম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবি একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা অনুযায়ী আমরা তাকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে কোর্টে সোপর্দ করব।