কুলাউড়ায় ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট চালকরা!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৯:১২ অপরাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক ট্রাফিক পুলিশ বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছেন বিভিন্ন যানবাহনের ও চালকরা। প্রায় ৫ বছর ধরে পুলিশের চাকুরীবিধি লংঘন করে একই থানায় কর্মরত থেকে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে এই চাঁদাবাজি। ট্রাফিক এএসআই কাওসার হয়রানির ভয়ে জেলার অন্য উপজেলা এমনকি পৌর এলাকার বাইরের সিএনজি, পিকআপ ও প্রাইভেট গাড়ি কুলাউড়ায় রির্জাভ আসা ছেড়ে দিয়েছে। এসব যানবাহনের চালকদের হয়রানি, চাঁদাবাজি ও অযথা মামালা কারণে গাড়ির মালিকরা অতিষ্ট হয়ে গাড়ি নিয়ে কুলাউড়া আসতে নিষেধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে এক পিকাআপ চালককে আটকে ২হাজার টাকা ঘুষ চায় এএসআই কাওসার। পর বাদানুবাদ করে চালক দেলওয়ার হাজার টাকা দিয়ে ছাড় পায় বলে সে জানায়। এভাবে প্রতিদিন শহরের বাইরে কখনও পিডিবি অফিস, ব্র্যাক অফিস অথবা উত্তর দিকে ফরেষ্ট অফিসের সামনে যানবাহনের কাগজ দেখার নামে ঘুষ বানিজ্যে নামেন এই ট্রাফিক এএসআই।
চালকরা জানান, সিপাহী পদে থাকাকালেই ট্রাফিক সার্জেন্টদের মতো মোটর সাইকেল চালিয়ে দিনব্যাপি ঘুষ বানিজ্য করে আসছেন কাওসার। তিন বছর আগে এএসআই পদে উন্নিত হওয়ার পর তার অপকর্ম আরও বেড়ে যায়। চালক শুকুর, শফিক বলেন, ওই কর্মকর্তা তাদের বলেছে লাখ লাখ টাকা দিয়ে প্রমোশন নিয়েছি এগুলো তুলতে হবে না? প্রমোশন আর পুনরায় পোষ্টিং যে টাকা দিয়েছি তার দশগুণ টাকা কুলাউড়া থেকেই তুলবো।
দিন কয়েক আগে রবিরবাজার এলাকার এক সিএনজি চালক রোগী নিয়ে কুলাউড়া এসে ফেরার পথে তার গাড়ি আটক করে কাওসার। চালকের অনুরোধে গাড়িটি না ছেড়ে থানায় নিয়ে যায়। বড় কর্তাদের দোহাই দিয়ে একদিন গাড়িটি আটকে রেখে পরদিন ২ হাজার টাকা নিয়ে সিএনজিটি ছেড়ে দেয়। গাড়ির মালিক উৎস দে জানায় আমার গাড়ির সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ওই কর্মকর্তা মোটা টাকা ঘুষের জন্য গাড়িটি আটকে রাখে।
নওমৌজা এলাকার এলাকার একটি সিএনজি যাত্রী নিয়ে কুলাউড়া আসে। ফেরার পথে তাকে ২-৩ কি.মি মোটর সাইকেলে ধাওয়া করে মাগুরা এলাকায় এসে তাকে জোর করে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করে। পরে লোকজন আসলে চালক জানায় সে পাঁচশ’ টাকা ভাড়ায় কুলাউড়া এসেছে। ট্রাফিককে একশ’ টাকা দিলেও ওই ট্রাফিক ৫শ’ টাকা ঘুষ চায়। নাহলে গাড়ি আটক ও মামলা দেয়ার হুমকি দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত চলে যান তিনি। এভাবে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ঘুষ বানিজ্য করে দাপটের সাথে চলছেন কাওসার এ অভিযোগ ভোক্তভোগী চালকদের।
চালক ও মালিকদের অভিযোগ সম্পর্কে এএসআই কাওসার এর কাছে গত রোববার জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা, তিনি কোন ঘুষ বানিজ্য করেন না। তিনি কুলাউড়াতে কত বছর ধরে আছেন জানতে চাইলে বলেন, প্রমোশনের আগে দু’বছর আর পরে তিন বছর এ থানাতেই আছেন। ভোক্তভোগীদের প্রশ্ন কোন খুঁটির জোরে তিনি দীর্ঘ ৫-৬ বছর এক থানায় থেকে লাখ লাখ টাকার ঘুষ বানিজ্য করছেন সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন কি?