শহীদ মিনারের নামফলক মুছে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৮:৩৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাব-সেক্টর কমান্ডারের খোদাইকৃত নামফলক মুছে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহর থেকে পাকিস্তানি হানাদারদের বিতাড়িত করে বালাট সাব-সেক্টরের কমান্ডার মেজর মোত্তালিব দামাল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর থেকেই সুনামগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রধান স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে শহীদ মিনারটি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের ভেতরে শহীদ মিনার নির্মাণ ও একাত্তরের ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উদযাপনের কারণে এটি অনন্য শহীদ মিনার হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জায়গা দখল করতে একটি বিশেষ মহল দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছে। শহীদ মিনারের অস্তিত্ব অস্বীকার করে শহীদ মিনার এলাকায় রাতের আঁধারে দু’টি মার্কেট নির্মাণ করা হয় চলতি বছরের শুরুতে। এর প্রতিবাদে সুনামগঞ্জের সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধারা গত এপ্রিল মাসে শহীদ মিনার কালো কাপড়ে ঢেকে দিয়ে প্রতিবাদ করেন। শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভাও করেন তারা। প্রতিবাদের মুখে একটি মার্কেট রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলা হলেও আরেকটি এখনও বহাল তবিয়তে আছে। এ নিয়ে এখনও ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে লিখিত আবেদনও করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
সম্প্রতি শহীদ মিনারের সামনে সাব-সেক্টর কমান্ডারের লাগানো স্মৃতিফলকটির নাম-নিশানা পাথর দিয়ে ঘষে মুছে ফেলা হয়েছে। আজ শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের নজরে আসে। ধাতব বস্তু দিয়ে নামফলকের উদ্বোধন ও ইতিহাস সংক্রান্ত সম্পূর্ণ লেখা মুছে ফেলা হয়েছে। এখন আর ফলকের একটি অক্ষরও অবশিষ্ট নেই। মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, যারা শহীদ মিনারের অস্তিত্ব অস্বীকার করে নানাভাবে উৎপাত করছে, তারাই এ কাজ করতে পারে।
মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে আমাদের কয়েকজনের নজরে আসে বিষয়টি। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে থানার পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছে।’
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে খবর পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’