সিলেটে রহিম শাহ’র মাজার ঘিরে সেই শহিদের প্রতারণার ফাঁদ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৭:২৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারের হযরত রহিম শাহ (র.)-এর মাজার ঘিরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃত সেই আব্দুস শহিদ আবারো নানা প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। মাজার কমিটির লোকদের ওপর হামলা-মামলা করে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) পুলিশ কমিশনার বরাবরে এই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রহিম শাহ’র মাজার কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারিছ আলী।
অভিযোগে বলা হয়, লালাবাজারের ফকিরের গাওয়ের মৃত আজমান আলীর ছেলে আব্দুস শহীদ একজন প্রতারক। ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর রহিম শাহর মাজারের কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি গঠন করার সময় আব্দুস শহীদ কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পাওয়ার পর মাজারের উন্নয়ন ও বার্ষিক ওয়াজ ও মাহফিল আয়োজন করার জন্য মাজারের ভক্তগণ বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বিভিন্ন অংকের টাকা পয়সা দান করেন। উল্লেখিত তারিখ হতে মাজারের রেজিষ্ট্রারী খাতায় প্রায় ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকার হিসাব থাকায় মাজারের কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ শহিদের কাছে উক্ত টাকার হিসাব চান। এ নিয়ে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সাথে সালিশ বসিলে আব্দুস শহীদ তাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের টাল বাহানা করিতে থাকে। এমনকি শহীদ কমিটির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নিজের নামের আগে শাহ উপাধী লাগাইয়া ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে। নিজের বাড়ির সামনে রাস্তার সম্মুখে খাদেম বাড়ি বলে রাতের আধারে একটি গেইট নির্মাণ করে। এর ফলে গ্রামবাসির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে, এছাড়াও নিজেকে হযরত শাহ আব্দুর রহিম (রহ.) মাজার এর খাদিম পরিচয় দিয়া উক্ত মাজারের ভক্তবৃন্দদেরকে নিজেকে পীর দাবি করে তেল পড়া, পানি পড়া, তাগাপড়া, মাটিপড়া সহ বিভিন্ন তাবিজ কবোজ দিয়া ভক্তদের নিকট প্রতারণার আশ্রয় নিয়া টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে।
মহিলা ইবাদত খানায় আগত নারীদের সাথে অশুভ আচরণ করতে থাকে। এতে মাজারের ভার্বমূর্তি নষ্ট হয়। ২০১৪ সালের শেষের দিকে শহীদকে মাজার পরিচালনা কমিটি ও গ্রামবাসী উক্ত কমিটি থেকে বহিস্কার করে দেন। পরে আবারো গত ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর নতুন কমিটি গঠন করা হয়। পরে গত ২০১৯ সালের ৩ মার্চ আবারো উল্লেখিত মাজারের একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি গঠন করার পর থেকে শহীদ বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে দলবল সঙ্গে নিয়ে মাজারে প্রবেশ করিয়া মাজারের দান বাক্সের নগদ টাকা সহ দানকৃত খাসি, গরু, মোরগ, মাজার থেকে জোর পূর্বক নিয়ে যায়।
উক্ত বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করিলে বিবাদী খুন খারাপী সহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। এমনকি ইদানিং শহীদ তার বাড়িতে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় গ্রাম বাসী তার অসামাজিক কাজে বাধা প্রদান করেন। এতে গত ১৪ আগস্ট শহীদ মাজার কমিটির লোকদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা (নং-১৩/১৫১) রুজু করা হয়। এই মামলায় র্যাব-৯ শহীদকে গ্রেপ্তার করে।
বর্তমানে শহীদ জামিনে বের হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে শহীদ দলবল নিয়ে মাজারের ভিতর অনাধিকার প্রবেশ করে মারপিট চালায়। এসময় ২টি খাসি যাহার মূল্য অনুমান ১৬,০০০/-(ষোল হাজার) টাকা ও রক্ষিত মাজারে নগদ দানকৃত ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা নিয়ে যায়।