সিলেটে ১০ লাখ টাকা না দেয়ায় শিক্ষক পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:১১ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার পর নিহতের বোনের দাবি করা ১০ লাখ টাকা না দেয়ায় একটি দুর্ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে; এমন অভিযোগ করেছেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার সেনগ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা হলধর চন্দ্র পাল। রোববার বিকেলে (০৬ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা হলধর চন্দ্র পাল বলেন, আমার বড় ছেলে দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিমাদ্রী পাল। আমার ছেলের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার প্রদীপ পালের বড় মেয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কম্পিউটার অপারেটর লাকী রানী পালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন বেশ ভালোই কেটেছে। তাদের দেড় বছরের এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৯ আগস্ট রাতে পুত্রবধূ লাকী রানী পাল রান্নাঘরে মাটির চুলায় ভাত রান্না করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুলার পাশে থাকা কুপি থেকে আমার পুত্রবধূর শাড়িতে আগুন লাগে। চিৎকার শুনে আমার স্ত্রী ও ছেলেসহ আমরা কম্বল গায়ে জড়িয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। আগুন নিভে গেলে আমরা লাকীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। ঘটনার সময় আমার বড় ছেলে হিমাদ্রী পাল তার ছোট ভাইদের নিয়ে পাশের একটি বাসায় ছিল। খবর পেয়ে ঘরে এসে স্ত্রীর এমন অবস্থা দেখে ছেলেটি হতভম্ব হয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে আমি নিজেও আহত হই। হাসপাতালে আমিও চিকিৎসা নিয়েছি।
মুক্তিযোদ্ধা হলধর চন্দ্র পাল আরও বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে আমার পুত্রবধূ লাকী পাল মৃত্যুবরণ করে। হাসপাতালে নেয়ার পর লাকী পাল কর্তব্যরত চিকিৎসক ও তার বাবা প্রদীপ পাল এবং আমিসহ অনেককে বলেছে, কুপি থেকে তার শরীরে আগুন লেগেছে। কিন্তু ঘটনার এক সপ্তাহ পর হঠাৎ করে লাকী পালের ছোট বোন প্রিয়াংকা রানী পাল ১৭ আগস্ট মোগলাবাজার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যৌতুকের জন্য মৃত্যুর ঘটানো ও সহায়তার অপরাধ এনে একটি মামলা করেন।
তিনি বলেন, ওই মামলায় আমার ছেলে হিমাদ্রী পালকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমাকে, আমার স্ত্রী শিখা পাল ও ছোট ছেলে হিমেল পালকেও আসামি করা হয়েছে। অথচ আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনই বৃদ্ধ এবং দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ। এ মামলায় ২ নম্বর আসামি থেকে ৪ নম্বর আসামি জামিনে রয়েছে। অপরদিকে ১ নম্বর আসামি হিমাদ্রী পালকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মুক্তিযোদ্ধা হলধর চন্দ্র পাল দাবি করেন, আমার পুত্রবধূর মৃত্যুর তিনদিন পর প্রিয়াংকা পাল আমার বড় ছেলে হিমাদ্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিল; যা দিতে আমরা অস্বীকৃতি জানাই। সেই সাথে আমার দেড় বছরের নাতিকেও তাদের দিয়ে দিতে বলে। এসব কারণে মূলত ক্ষোভ থেকে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন প্রিয়াংকা পাল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জালালপুর ইউনিয়নের বৈরাগী বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বাবু সুবল চন্দ্র পাল ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল।