সুনামগঞ্জ শহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দোয়ারাবাজার উপজেলা, চরম ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ আগস্ট ২০২০, ১১:৩৭ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা :
৩ দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের তিনটি পয়েন্ট ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। একেবারেই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে মান্নার গাঁও ইউনিয়নের সড়কটি। যে কারণে জেলা শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দোয়ারাবাজার উপজেলা। তাই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
ওই সড়ক দিয়ে সরাসরি ছাতক উপজেলার লোকজনও যোগাযোগ করতেন। কিন্তু ওই সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় ছাতক উপজেলার মানুষ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক পার হয়ে জেলা শহরের প্রবেশ করতে হয়। বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনও শুরু হয়নি সড়কের সংস্কার কাজ। সড়ক মেরামতের কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ দোয়ারাবাজার উপজেলার লোকজন।
সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষকে নৌকায় চলাফেরা করতে হচ্ছে। পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। শহর আসতে হলে তাদেরকে সড়কের ভাঙা অংশ পার হতে হয় নৌকা দিয়ে।
পরে আবার সুনামগঞ্জ আসার জন্য ওঠতে হয় আরেকটি গাড়িতে। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ওই স্থানটিতে যারা নৌকা দিয়ে পারাপার করেন তারাও যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। যেন দেখার কেউ নেই। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি স্থানীয় মানুষদের সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, শুষ্ক মৌসুমের আগে সড়কটি পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব নয়।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে জুন ও জুলাই মাসে সুনামগঞ্জে তিন দফা দেখা দেয়। পাহাড়ি ঢলের পানি লোকলয়ে প্রবেশের পাশাপাশি জেলার অধিকাংশ সড়কও তলিয়ে যায়। ঢলের পানির চাপে সুনামগঞ্জ-ছাতক সড়কের তিনটি পয়েন্টে ভাঙন ধরে। দ্বিতীয় ও শেষ দফা বন্যার পানিতে নোয়াগাঁও, ফাইপ পয়েন্ট ও দোহালি ইউনিয়ন এলাকার সড়ক পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায়।
দোয়াররাবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হারুন বলেন, আমাদের ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সরাসরি জেলা শহরে যাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে অফিসগুলো পুরোদমে চালু হওয়ার কারণে জেলায় বিভিন্ন কাজে যেতে হয়। সেজন্য চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছি আমরা। আমাদের দাবি দ্রুত যেন এই সড়ক মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়।
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাজিদ পুরের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, দোয়ারাজাবার-সুনামগঞ্জ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। নৌকা দিয়ে পারাপারে অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। একইসঙ্গে বেশি রাত হলে আর নৌকা পাওয়া য়ায় না। আমাদের একটাই দাবি সড়কটি দ্রুত যেন মেরামত করা হয়।
দোয়ারাবাজারের সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী সাবিত্রী দাস বলেন, সড়ক যখন ভালো আমরা দ্রুত সুনামগঞ্জে চলে যেতাম। কিন্তু এখন দোয়ারাবাজার থেকে গাড়িতে ওঠলে এই ভাঙনের আগে নেমে নৌকায় পার হতে হয়। একদিকে যেমন সময় অপচয় হয়। অপরদিকে অর্থও ব্যয় হয়। আমাদরে একটাই দাবি এখানে যেন কালভার্ট করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামত করা হয়।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, বালির বস্তা ফেলে সড়কের ভাঙা অংশ মেরামত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে, শুষ্ক মৌসুমের আগে সড়কটি পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব নয়। চলতি ৩ দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৩০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে তা প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে দ্রুত সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু হবে।