কুলাউড়ার পালের মোড়া পর্যটন কেন্দ্রে উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ ও যাতায়াত নিষিদ্ধ কোনোটাই সঠিক নয়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ আগস্ট ২০২০, ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ
স্বপন দেব ও ফজলে রাব্বী:
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনুর পরিচয় ব্যবহার করে, হাকালুকি হাওর সংলগ্ন পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় স্থান পালের মোড়া সেতুতে সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ ও জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অপপ্রচার করে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম রেনু এই প্রতিবেদককে বলেন, পালের মোড়া সেলফি ব্রীজ সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে উলামা পরিষদ আমার কাছে এসেছিলো। আমি তাদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বলেছি, আমাদের এলাকায় দূরদূরান্ত থেকে যেসব মেহমানরা আসেন তারা যাতে শালীনতা বজায় রেখে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এখানে এসে কেউ অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হলে তাদের যেন আইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে যেন উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়। এছাড়া আমি থানা পুলিশকে বলেছি, আমাদের এলাকায় টহল বাড়িয়ে জনসমাগমের স্থান যেন সবসময় নজরদারিতে রাখা হয় এবং পালের মোড়া পর্যটন এলাকায় সন্ধ্যার পর বহিরাগত কেউ যেন এখানে অবস্থান না করে।
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, পালের মোড়া সেতুর উপর কয়েকটি বাতি লাগিয়ে আলোকিত করায় এখন আর রাতে সেখানে কোনো বাজে আড্ডার সুযোগ নেই। স্থানটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হওয়ায় এখানে অশ্লীলতা করার কারো সাহস নেই। উক্ত পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদান সহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সেখানে সাদা পোষাকেও সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।
পালের মোড়া পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির বলেন, পালের মোড়া সেলফি ব্রীজের কারণে স্থানীয় মৎস্যজীবি সহ অনেক বেকার লোক উপকৃত হচ্ছেন। হাকালুকি হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পর্যটক আমাদের এলাকায় ঘুরতে আসেন। ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমার এলাকায় বেড়াতে আসা মেহমানদের স্বাগতম জানাচ্ছি। অস্বীকার করার উপায় নেই পালের মোড়া সেতুর মাধ্যমে আমাদের এলাকায় কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। আমি আশাকরি ভূকশিমইল ইউনিয়নে সরকারের এই পর্যটন সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি কাজ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
পালের মোড়া পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফি আহমেদ সলমান বলেন,পালের মোড়া পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য মৌলভীবাজার-২ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন পালের মোড়া সেলফি ব্রীজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি সৌর সড়কবাতি দেওয়া হয়েছে। আমি কুলাউড়া আসলে পালের মোড়া সরেজমিনে পরিদর্শন করে হাকালুকি হাওরের ভূকশিমইল অংশে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা যায় কিনা সেটার সম্ভাব্যতা যাচাই করবো।
পালের মোড়া পর্যটন কেন্দ্র নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, কুলাউড়া উপজেলায় অবকাশ যাপনের তেমন কোনো স্থান না থাকায় জনগণকে কিছুটা চিত্তবিনোদনের সেবা দেওয়ার জন্য, পালের মোড়া পর্যটন এলাকা মূলত গত বছর উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন যুবসমাজের সহযোগিতায় তা দেশ বিদেশের পর্যটকদের নজরে আনা হয়েছিলো। উল্লেখিত এলাকায় পর্যটনের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা যাতে সুন্দরভাবে চলমান থাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। আর উলামা পরিষদের অভিযোগ প্রশাসনিকভাবে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখানে পর্যটনের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলমান থাকবে এবং সেখানে যাতে কোন অসামাজিক কাজ না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। উক্ত পর্যটনীয় এলাকায় নতুন কর্মসংস্থানের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দিয়ে এগিয়ে নেয়া হবে।