১৫ দিন পর আলোচিত সেই গ্রাইন্ডিং মেশিনের রহস্য উন্মোচন!
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২০, ৮:৪৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় পুলিশের মোটরসাইকেল থেকে বোমা সদৃশ বস্তু হিসেবে উদ্ধার হওয়া আলোচিত সেই ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ মেকানিকের ভুলে রয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ।
দেশব্যাপী আলোচিত সেই ঘটনার প্রায় ১৫ দিন পর এ বিষয়ে ঘটিত তদন্ত কমিটি গ্রাইন্ডিং মেশিনের রহস্য উন্মোচন করেছে বলেও দাবি মহানগর পুলিশের।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার পিপিএম। তবে গ্রাইন্ডিং মেশিনকাণ্ডে সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর বহিষ্কারাদেশ উঠছে না বলেও জানান।
শনিবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৩ টায় পুলিশের এ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার দিন অর্থ্যাৎ ৫ আগস্ট বেলা ২ টার দিকে ডিউটিতে যাওয়ার আগে মোটরসাইকেলটি কাজ করার জন্য কুমারপাড়ার কাছাকাছি এলাকার মুন্না ওয়ার্কশপে নিয়ে যান। তখন ওয়ার্কশপের কর্মীরা মোটরসাইকেলের কিছু যন্ত্রাংশ কেনা লাগবে বলে জানায়। এসময় আমাদের পুলিশ সদস্যর ডিউটির সময় হয়ে গেলে মোটরসাইকেলটি ওয়ার্কশপে রেখে যান।
পরে ওয়ার্কশপের কর্মীরা মোটরসাইকেলটি মেরামত করে ট্রায়াল দেন। এসময় ওয়ার্কশপের এক কর্মী ভুলবশত গ্রাইন্ডিং মেশিনটি মোটরসাইকেলে রেখে দেন। আর গ্রাইন্ডিং মেশিনটি নষ্ট হওয়ায় ওয়ার্কশপের কর্মীরা পরে আর খোঁজ নেননি। হয়তো অসাবধানতাবশত বা পুলিশের গাড়িকে নিজেদের গাড়ি মনে করে তারা ভুলে মেশিনটি রাখে। বাসা বা অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে তাদের মধ্যে অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকায় এ বিষয়ে কোনো মামলা হচ্ছে না বলেও জানান জ্যোতির্ময় সরকার।
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পরপর সার্জেন্ট চয়ন নাইডু সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে গ্রাইন্ডিং মেশিনকাণ্ডের সমাধান হলেও চয়ন নাইডুর বহিষ্কারাদেশ উঠছে না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, মূলত দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি মোটরসাইকেল ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। সব মিলিয়ে তার ব্যাপারে ডিপার্টমেন্ট সিদ্ধান্ত নিবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডু তার মোটরসাইকেল চৌহাট্টা পয়েন্টে রেখে চা খেতে যান। তবে তিনি ফিরে গিয়ে মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ একটি বস্তু দেখতে পান। বিষয়টি থানায় অবহিত করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত এসে ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে।
এরপর বোমাসদৃশ ওই বস্তুটি উদ্ধারে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। অবশেষে তারা ব্যর্থ হলে ঢাকা র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ডাকা হয়। ওইদিন রাত ৯ টার দিকে র্যাব-৯ সিলেটের একটি বোমা ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে পুলিশের কর্মকর্তা বিষয়টি ঢাকায় জানান।
তবে পরদিন বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিকেল পৌনে চারটার সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের একটি বোম ডিসপোজাল টিম বোমাসদৃশ বস্তুটি মোটরসাইকেল থেকে খুলে ফেলে। এরপর সেনাবাহিনী প্রেস কনফারেন্সে এটিকে একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন বলে নিশ্চিত করে।