পায়ে হেঁটে কুমিল্লা থেকে সুনামগঞ্জে যুবক, স্বপ্ন পুরো দেশ দেখার
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২০, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
পায়ে হেঁটে এসেছন ২৩৯ কিলোমিটার পথ। কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত। সময় লেগেছে ৯দিন। তার মধ্যে ঝড়োবৃষ্টি থাকায় মাঝে মধ্যে বিশ্রাম নিতে হয়েছে। এর আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়েছেন এই যুবক। একই ভাবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের বান্দরবন জিরো পয়েন্ট থেকে আলিকদম একশ কিলোমিটার দুইদিনে পায়ে হেঁটে যান।
বলছিলাম কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার দেবিদ্বার গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম শান্ত’র কথা। ঢাকার যাত্রাবাড়ি ধনিয়া ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে ভুগোল ও পরিবেশ বিষয় নিয়ে সাইফুল ইসলাম অনার্স পাস করেন। এর আগে ২০১১ সালে দেবিদ্বার রিয়াজ উদ্দন পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৩ সালে দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
সাইফুল ইসলাম নিজের শখের বসে ম্যারাথন দৌড় ও পায়ে হেঁটে এই প্রান্ত থেকে ওইপ্রান্তে পাড়ি দেন। তবে আর্থিক ভাবে ততটা স্বচ্ছ নন বলে জানান তিনি। বাবা পেশায় ইলেকটিশিয়ান। তিন ভাইবোনের মধ্যে শান্ত দ্বিতীয়।
শান্ত জানান পড়াশুনার পাশাপাশি সব সময় হাঁটা ও দৌড়াতেন। ম্যারাথনে অংশ নিতে যেয়ে অনেক ভাই-বন্ধুদের সাথে পরিচয় হয়। এই পরিচিতির সুবাধে দৌড় কিংবা পায়ে হেঁটে এই জেলা থেকে ওই জেলায় যাবার সময় এই পরিচত ভাই বন্ধুরা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তবে এর বাহিরে নিজেই নিজের খরচ বহন করেন। এতে তার আর্থিক খচর বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, ‘ছোট থেকেই সারা দেশ পায়ে হেঁটে দেখার স্বপ্ন ছিল। তাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। আর নিজেকে প্রস্তুত করতাম। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিচ্ছি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আমি বান্দরবন জিরো পয়েন্ট থেকে আলিকদম একশ কিলোমিটার দুইদিনে পায়ে হেঁটে যাই। সময় লেগেছে দুইদিন। এর পর দেশের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করতে চেয়েছি কিন্তু করোনা মহামারী শুরু হলে তা আপাতত বন্ধ রাখি। পরে দেখলাম ওই্ করোনা মহামারী হয়তো আর শেষ হবে না তাই আবার শুরু করলাম। গত ১২ আগস্ট আমি দেবিদ্বার থেকে রওয়না করি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হবিগঞ্জ হয়ে জগন্নাথপুর পৌঁছাই। গতকাল ২১ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছাতে পারি। তবে বৃষ্টি, ঝড় থাকায় আমার কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আমার এই হাাঁটার সময় আমি স্ট্রাভা অ্যাপ ব্যবহার করেছি যাতে আমার প্রত্যেক মুভমেন্ট এই অ্যাপে রেকর্ড করা আছে’।
শান্ত বলেন, ‘আমি সারা দেশ পায়ে হেঁটে দেখতে চাই এটা আমার অনেক বড় স্বপ্ন। কিন্তু আমি আর্থিক বাবে ততটা স্বচ্ছল না তাই কেউ বা কোন প্রতিষ্ঠান আমাকে স্পর্ন্সর দিলে আমার এই স্বপ্নটা পূরণ হতো।
তারপরও আমি হাঁটা চালিয়ে যাবো। আর্থিক ভাবে কিছুটা কষ্ট হবে কিন্তু আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করবো’।