মৃত্যুর প্রায় ৪মাস পর মাল্টা থেকে কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরছে সিলেটের তন্ময়
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ আগস্ট ২০২০, ৬:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
দীর্ঘ ৩ মাস ৩ সপ্তাহ (প্রায় ৪মাস) প্রতিক্ষার পর কফিনবন্দি হয়ে দেশে আসছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মেধাবী ছাত্র কামনাশীষ চন্দ তন্ময়’র মরদেহ। ২৩ আগস্ট রোববার টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ভোর ৫ টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছার কথা রয়েছে তন্ময়’র মরদেহ। মাল্টায় বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তন্ময়’র মরদেহ আসছে দেশে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তন্ময়ের জেষ্ঠ্য চাচা জিতেন কুমার চন্দ।
স্বপ্ন ছিল উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে নিজের জীবনকে নতুন করে সাজানোর! ভালো একটি চাকু্রি, পরিবারের মুখে হাসি, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, আর সেই স্বপ্নই সাগরে তলিয়ে যায় ফেঞ্চুগঞ্জের মেধাবী ছাত্র কামনাশীষ চন্দ তন্ময়’র। ইউরোপের দেশ মাল্টার ম্যালিহা শহরের করাল লেগুন পর্যটন কেন্দ্র থেকে সাগরে সাঁতার কাটতে গিয়ে তলিয়ে যায় তন্ময়’র স্বপ্ন। কামনাশীষ চন্দ তন্ময়’র আরেক নাম ছিল শান্ত, পরিবারের কাছে ‘শান্ত’ নামটিই ছিল অতি আদরের।
এ ব্যাপারে তন্ময়ের জেষ্ঠ্য চাচা শিক্ষক জিতেন কুমার চন্দ জানান, মেধাবী ছাত্র কামনাশীষ চন্দ তন্ময় এ বছরের ২ জানুয়ারি স্টুডেন্ট ভিসায় ম্যানেজমেন্ট এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রীর জন্য পাড়ি জমায় ভূমধ্যসাগরের বিশাল বুকে ক্ষুদ্র একটি দেশ মাল্টায়। ক্লাসও চলছিল যথারীতি।
তবে বিধিবাম, ৪ মাসের শেষ দিনে অর্থাৎ ২ মে শনিবার মাল্টা সময় বিকেল সাড়ে ৪ টায় মাল্টার ম্যালিহা শহরের করাল লেগুন পর্যটন কেন্দ্র সমুদ্র সৈকতে বন্ধুদের সাথে সাঁতার কাটতে যেয়ে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে তলিয়ে যায় শান্ত। পরদিন ৩ মে রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায় খবর আসে শান্ত সাগরে নিখোঁজ রয়েছে! তবে মাল্টা সরকারের উপকূলীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টার নিয়ে উদ্ধারের চেষ্ঠা চালিয়ে অবশেষে বিশাল সমুদ্র থেকে উদ্ধার করেন শান্ত’র মরদেহ।
জিতেন কুমার চন্দ আরো জানান, মাল্টায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা শান্ত’র মরদেহ দেশে পাঠাতে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন যা চিরস্মরণীয়, বিশেষ করে- রাধাকান্ত ঘোষ, মশিউর রহমান, অঞ্জন দাস গুপ্ত, কাউছার আমীন হাওলাদার, নাজমুল হক, রাজীব দাস ও আশিক উদ্দিনের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
একদিকে পুত্র হারানোর শোক আর অন্যদিকে অপেক্ষার প্রহর ছিল শান্ত’র পরিবারে, অবশেষে শান্ত’র মরদেহ দেশে আসছে এই খবরে স্বস্তি ফিরেছে তাঁর পরিবারে। নিজ হাতে তাদের সন্তানকে সৎকার করতে পারছেন! এ জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করছেন তাঁরা।
ফেঞ্চুগঞ্জ বাজারে জে. ওসমানি সড়কে অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বইঘর ও সুধা প্রিন্টিং প্রেস’র অন্যতম পরিচালক ও উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামের কৃপেশ রঞ্জন চন্দ (তপন)’র জেষ্ঠ্য ছেলে কামনাশীষ চন্দ তন্ময়।