টাঙ্গুয়ার হাওরসহ পর্যটন স্পটে পর্যটকরা ঝুঁকছে মাদক সেবনে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ আগস্ট ২০২০, ৩:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
শহরের কোলাহল মুক্ত হয়ে বিশুদ্ধ বাতাশ আর প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয উপভোগ করতে দেশে বিদেশের আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন দ্বিতীয় রামসার সাইট ও প্রকৃতির লীলাভূমি সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর,শহীদ সিরাজ লেক,বারেকটিলা, জাদুকাটা নদী, শিমুল বাগানসহ বিভিন্ন পর্যটনস্পটে। পরিবেশ বান্ধব মেঘালয় পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহে এসে মুগ্ধ হন সবাই। কিন্তু এখানে এসে অধিকাংশ স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ঝুঁকছে মাদকের নেশায়।
এছাড়াও সাউন্ড বক্সে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে শব্দ ও পরিবেশ দূষণে মেতে উঠছে দিন দিন। আর এমনি অভিযোগ উঠেছে পর্যটন স্পট এলাকা গুলোর বাসিন্দাদের মুখে।
গত ১৭ আগষ্ট টেকেরঘাট এলাকায় আসা এক পর্যটককে মাদকসহ পুলিশ আটক করে। আটককৃত পর্যটক নেত্রকোনা জেলা সদরের নাগরা পৌর এলাকার আস্বিনী পালের ছেলে প্রসাদ।
পুলিশ জানায়, উপজেলার টেকেরঘাট ডাম্পের বাজার সড়কে সোমবার(১৭ আগষ্ট) দুপুরে প্রকাশ্যে বিদেশি মদ নিয়ে প্রসাদ পাল ঘোরাফেরা করার সময় স্থানীয়রা টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করলে পুলিশ থাকে আটক করে।
বিভিন্ন সুত্রে ও এলাকাবাসী জানায়, টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক,বারকটিলা,জাদুকাটা নদী,শিমুল বাগানসহ পর্যটন স্পষ্টগুলো সীমান্ত এলাকায়। পুলিশ, বিজিবি কঠোর তৎপরতা থাকার পরও সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিনেই চোরাই পথে চোরাচালানীরা ভারত থেকে তাদের লোকজনের মাধ্যমে মদ, গাজা, ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য আনছে সহজে। আর মাদ্রক ব্যবসায়ীরা আগত পর্যটকদের নৌকা ভিরলেই কৌশলে জানতে চায় কাদের কি লাগবে। আর যারাই তাদের চাহিদার কথা জানায় তাদের হাতেই সুকৌশলে অধিক মূল্যে তুলে দেয় বিভিন্ন মাদকদ্রব্য নিরাপদে চোরাচালানী ও সাংবাদিক নামধারীদের একটি অংশ। ফলে দিনে ও রাতে আগত পর্যটকরা তাদের মত করে মাদক সেবনে মেতে উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজন জানান, উপজেলা লাউড়েরগর থেকে বাগলী পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা দিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট, মদ, গাজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রেতার রয়েছে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সিন্ডিকেট। যারা দীর্ঘ দিন ধরেই এই ব্যবসার সাথে জরিত রয়েছে। আর এই মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে সাংবাদিক নামধারীদের একটি অংশ। যারা ঐ মাদক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে মাসোহারা নিচ্ছে। হয়েছে রাতারাতি আগুল ফুলে কলাগাছ। যার জন্য মাদক ব্যবসায়ীরাও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে দিন দিন।
আর পুলিশ বাহিনী কিছু মাদক ব্যবসায়ীদের অভিযান চালিয়ে আটক করে মামলা দিলেও মূলহোতারা রয়েছে এখনও ধরাছোয়ার বাইরে। ফলে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রি এখনও পর্যন্ত বন্ধ হয়নি।
সচেতন মহল জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে মাদকের বয়াল থাবায় আক্রান্ত হবে উঠতি বয়সী যুব সমাজের একটি বিরাট অংশ। আর পুলিশ বাহিনী যতেষ্ট বুদ্ধিমত্তা ও চৌকশ নজরধারী রাখলে সহজে মাদক নির্মূল হবে। কারন তাদের বিভিন্ন সোর্স রয়েছে যার কারনে তারা সহজে জানতে পারেন কারা মাদক ব্যবসায়ী। তাদের কঠোরহস্থে দমন করা এখন সময়ের দাবী।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার (ওসি) মো. আতিকুর রহমান জানান, আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি মদ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতাসহ সংশ্লিষ্ট ধারায় এক পর্যটককে আটক করে তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলায় মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা আমাদের কঠের নজরধারী রাখছি আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের দিকে। কাউকেই কোন ছাড় দেওয়া হবে না।