অনিশ্চয়তায় কুয়েত ফেরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০২০, ৪:০১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
কয়েক বছর পরপর লম্বা ছুটি নিয়ে দেশে আসেন বিভিন্ন দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ছুটি কাটাতে দেশে এসেছিলেন এমন প্রায় ৪০ হাজার কুয়েত প্রবাসী। তবে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় পরবর্তী সময়ে আটকা পড়েন তাদের সবাই। অন্যদিকে চলতি আগস্ট থেকে ঢাকা-কুয়েত রুটে সপ্তাহে একটি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। শুরু হয়েছিল টিকিট বিক্রিও।
তবে হঠাৎ করেই ১ আগস্ট বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশ থেকে সরাসরি বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় কুয়েত। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
ফলে বাতিল হয়ে যায় বিমানের কুয়েতে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনাও। এ অবস্থায় ছুটি শেষে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশী কুয়েতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তাদের সবাই রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।
অনেকেই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার জটিলতায় পড়ার আশঙ্কাও করছেন।চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন জানিয়ে কুয়েত প্রবাসী সিরাজগঞ্জের মোর্শেদ আলম গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর পর ছুটি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে এসেছি। মার্চের মাঝামাঝি ফেরার কথা ছিল।তবে করোনার কারণে যাইনি।
কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে ছুটিও বাড়িয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু এভাবে আরো কিছুদিন গেলে কোম্পানি অন্য কাউকে কাজে নিয়োগ দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমার আকামা বাতিল হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
তবে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, যারা ছুটিতে গিয়ে আটকা পড়েছেন, তাদের খুব বেশি উদ্বেগের কারণ নেই। কারণ কুয়েত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সার্কুলারে বলা হয়েছে, যারা কুয়েতে আছেন তাদের আকামার (ভিসা) মেয়াদ আগস্ট-২০২০ পর্যন্ত বাড়বে।
আর যারা ছুটিতে দেশে গিয়ে করোনার কারণে ফ্লাইট না থাকায় আটকা পড়েছেন, তাদের আকামার মেয়াদ স্বাভাবিকভাবেই চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়বে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই বাংলাদেশসহ সাতটি দেশকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল কুয়েত। তবে বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকা দেশের তালিকা আরো বাড়িয়ে ১ আগস্ট কুয়েতের সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালকের তরফ থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এবার নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরো বর্ধিত করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ৩০টি দেশ হলো বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, আর্মেনিয়া, ফিলিপাইনস, সিরিয়া, স্পেন, সিঙ্গাপুর, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভিনা, শ্রীলংকা, নেপাল, ইরাক, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, চিলি, পাকিস্তান, মিসর, লেবানন, হংকং, ইতালি, উত্তর মেসিডোনিয়া, মলদোভা, পানামা, পেরু, সার্বিয়া, মন্টেনিগ্রো, ডমিনিকান রিপাবলিক ও কসোভো।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশের অন্যতম শ্রমবাজার কুয়েত। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ ছোট আয়তনের দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশ স্থানীয় নাগরিক, আর ৭০ শতাংশই অভিবাসী।