সিলেটে করোনা হাসপাতালের পাশে পশুর হাট, প্রতিবাদে মানববন্ধন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০২০, ১০:৩১ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেটে করোনা চিকিৎসার বিশেষায়িত হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। এই হাসপাতালের বিপরীতেই সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের অবস্থান। এই মাঠেই এ বছরের ঈদুল আযহায় কোরবানির পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) । এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ও পাশ্ববর্তী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা।
তবে করোনা হাসপাতালের ঠিক সামনেই হাট বসানোর ঘোষণায় নাখোশ আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, এলাকাবাসীসহ সচেতনমহল। একই সঙ্গে কয়েকটি ইসলামী সংগঠনের পক্ষ থেকেও এই মাঠে পশুর হাট না বসাতে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়াসহ মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। এছাড়া স্মারকলিপি দেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাট বসানোর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে মাঠের পাশের সড়কে মানববন্ধন করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা। এসময় তারা অবিলম্বে সিসিকের পশুর হাট বসানোর এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এছাড়া মঙ্গলবার একই দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও সিসিক মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার ছাত্র নূর হোসেন ফারুক বলেন, ‘হাসপাতালের সামনে পশুর হাট বসানো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এই মাঠে কখনও পশুর হাট বসানো হয়নি। অথচ এ বছর পশুর হাট বসানোর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখানে পশুর হাট বসালে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সমাগম ঘটবেই। একই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে। এ কারণে শিক্ষার্থীসহ এলাকার বাসিন্দারা এই মাঠে পশুর হাট বসানোর বিরোধীতা করছেন।’
দরগাহ এলাকার বাসিন্দা গুলজার আহমদ বলেন, ‘মাঠের পাশেই করোনার আইসোলেশন সেন্টার। এখানে আগে কখনও হাট বসানো হয়নি। এ কারণে তারা এখানে হাট না বসানোর দাবি জানাচ্ছেন।’
আনজুমানে খেদমতে কুরআন সিলেট-এর সভাপতি প্রফেসর সৈয়দ মাওলানা ইকরামুল হক বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ কোন ভাবেই থামছেনা। এছাড়া এই মাঠের বিপরীত পাশেই সিলেটের বিশেষায়িত করোনা হাসপাতালের অবস্থান। একই সঙ্গে অন্য পাশেও কয়েকটি হাসপাতাল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমন বাস্তবতায় জনগুরুত্বপূর্ণ এই মাঠে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। পশুর হাটে জনসমাগম বৃদ্ধির কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এ কারণেই তারা এর বিরোধীতা করছেন।
এদিকে পশুর হাট না বসাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম এবং সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী মোশাররফ রাশেদ। নোটিশে তিনি এই স্থান থেকে পশুর হাট সরিয়ে ঝুঁকিবিহীন অন্য এলাকায় হাট বসানো আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে উল্লেখ করেছেন।
সিসিক সূত্র জানায়, সিলেটে কাজীরবাজার পশুর হাট ছাড়াও নগরের তিন খোলা মাঠে পশুর হাট বসানোর জন্য সিসিককে অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরপরই যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ, এমসি কলেজ মাঠ ও দক্ষিণ সুরমায় কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালের পাশের খোলা মাঠে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে হাটের ইজারার জন্য দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে যত্রতত্র পশুর হাট বসাতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে তিনটি জায়গায় কোরবানির পশু হাট করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। এরপরই এই তিন হাট ইজারা দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।’