বিশ্বনাথে গৃহবধূর লাশ দাফনে বাধা, অতঃপর …
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২০, ৭:৪৬ অপরাহ্ণ
বিশ্বনাথ সংবাদদাতা :
বিশ্বনাথে আত্মহত্যা করায় ফাতেমা বেগম (২১) নামে এক গৃহবধূকে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি পঞ্চায়েত কমিটির লোকজন। পরে নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূকে সিলেটে এনে শুক্রবার (৩ জুলাই) রাত ৯টার দিকে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত মানিকপীর টিলায় দাফন করা হয়। বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁও গ্রামে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেছে।
তবে গৃহবধূ ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন না-কি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন রয়েছে।
নিহতের মা রঙমালা বেগম দাবি করেছেন- তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করে পরে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের শেখেরগাঁওয়ের জামিল আহমদের (২৫) স্ত্রী ফাতেমার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের মর্গে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বামীর বাড়ি শেখেরগাঁওয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় গ্রামের কথিত পঞ্চায়েত কমিটির লোকজন নিহতের স্বামীকে বলেন- লাশ নিয়ে চলে যাও। আত্মহত্যায় মারা যাওয়া কাউকে পুরোনো রেওয়াজ (প্রথা) অনুযায়ী গ্রামের পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করতে দেয়া হবে না। পরে লোকজনের বাধার মুখে বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে মানিকপীর টিলায় নিয়ে আসেন নিহতের স্বামী জামিল আহমদ। রাত ৯টার দিকে সিলেটের মানিকপীর টিলায় গৃহবধূ ফাতেমার মরদেহ দাফন করা হয়।
গ্রামে দাফন করতে না দেওয়া প্রসঙ্গে শেখেরগাঁওয়ের পঞ্চায়েত কমিটির অন্যতম সদস্য মছব্বির আলী ও রাশিদ আলী বলেন, পুরোনো রেওয়াজ (প্রথা) অনুযায়ী আত্মহত্যায় মারা যাওয়া কাউকে গ্রামের পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন করতে দেয়া হয় না। তাই লোকজন গ্রামে দাফন করতে নিষেধ করেছেন।
নিহত ফাতেমার স্বামী জামিল আহমদ বলেন, গ্রামের লোকজন আমার স্ত্রীর মরদেহ দাফনে বাধা দেয়ায় সিলেটে নগরে নিয়ে মানিকপীর টিলায় দাফন করেছি।
ফাতেমাকে হত্যার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে জামিল বলেন, ঘটনার আগের দিন ঢাকা থেকে আমি বাড়ি ফিরেছি। বাড়ি ফেরার পরদিন ফাতেমা আত্মহত্যা করেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বিষয়টি হত্যা না আত্মহত্যা তা বলা যাচ্ছে না। এমনকি মামলাও নেয়া যাচ্ছে না। তবে পুলিশ নিহতের পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।