কুলাউড়ায় ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে, নানা অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২০, ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পিডিবি’র বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল নিয়ে গ্রাহকরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে পিডিবি’র মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি না গিয়ে, মিটারের রিডিং না দেখে, অফিসে বসে তৈরি করছেন মনগড়া বিল। গত দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল মাত্রাতিরিক্ত বাড়ানোয় গ্রাহকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। কলাউড়ায় পিডিবি’র শতাধিক গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতি মাসে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল দিলেও উপজেলার লোডশেডিং, সামান্য বাতাসেই বিদুৎ চলে যাওয়া, যান্ত্রিকত্রুটিসহ নানা অব্যবস্থাপনা দ‚র করতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। আর করোনার অজুহাতে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচরিী নিয়মিত অফিস না করায় জনদূর্ভোগ চরমে ওঠেছে।
কলাউড়া পৌর এলাকাসহ কয়েকটি ইউনিয়ন পিডিবি’র আওতাভুক্ত হলেও কিছু ইউনিয়ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনস্থ সেখানেও ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ট হয়ে উঠছেন গ্রাহকরা। দ্বিগুণ, তিনগুণ বিদ্যুৎ বিলের সাথে তিন মাসের বিল সংযুক্ত করা হয়েছে। পৌর এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন পেশার গ্রাহক এসব বিল নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন।
কলাউড়া পিডিবি’র আওতাভুক্ত আবাসিক ও বানিজ্যিক এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৭-৮ মাস ধরে কোন মিটার রিডার বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মিটার রিডিং না দেখেই মনগড়া রিডিং লিখে তৈরি করছে ভুতুড়ে বিল। আর এসব অভিযোগের কোন সমাধান না করায় অনেক গ্রাহকের প্রতিমাসে ৩-৪ হাজার টাকা আবার করো বিল আসছে ৭-৮ হাজার টাকা। এ বিষয়ে গ্রাহকরা আপত্তি জানালে লোকবল সংকট, পরবর্তী মাসে সমন্বয় করে দেয়া হবে এসব কথাবলে গ্রাহক হযরানিসহ উৎকোচ আদায়েরও অভিযোগ করেন ভোক্তভোগী গ্রাহকরা। গত তিন মাসের বিল না দিয়েই কলাউড়া পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ৩০ জুনের মধ্যে বকেয়া বিল জমা না দিলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করলে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ফলে বাধ্য হয়ে শ’ শ’ গ্রাহক করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ধারকর্জ করে ভুতুরে বিল জমা করছেন। এ অনিয়ম সম্পর্কে গ্রাহকরা কুলাউড়া ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর কাছে মৌখিক অভিযোগও করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, মাগুরা আবাসিক এলাকার গ্রাহক নং- ৪৬৩০৭০৯৯ তিনমাস আগে তার মিটারে অতিরিক্ত বিল দেয়া অভিযোগ কলাউড়া পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ আরেফিন এর নিকট জানালেও বিষয়টি সমাধান না করে ২৩জুন রাতে গ্রাহককে তিন মাসের বকেয়া বিল ৭ হাজার ৬শ’ ১৯ টাকার বিল(৯১৮৯৯৪০৭) টি ২৪ জুনের মধ্যে জমা দিতে বিল পাঠান। একইভাবে গ্রাহক নং-৪৬০৩৯৫২৪ ও ৪৬০৬৩৫৬ গ্রাহককে বিগত তিন মাস বিল না দিয়ে একসাথে মোটা অঙ্কের বিল পাঠানো হয়েছে। অন্য গ্রাহক নং-৪৬২৯২৩২৬ এর মিটার রিডিং এর অতিরিক্ত ১ হাজার ইউনিট বেশি টাকার বিল দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
করোনা সংক্রমণের কালে ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’ এসব ভুতুড়ে বিলে চরম ভোগান্তির শিকার গ্রাহকরা অভিযোগে করেন একসাথে তিন মাসের বড় অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল তাদের পক্ষে পরিশোধ অসম্ভব। তাই বিলম্ব মাশুল ছাড়া বিল পরিশোধের সময় বৃদ্ধির দাবি গ্রাহকদের।
অভিযোগ বিষয়ে কলাউড়া পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ আরেফিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে মিটার রিডিং নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই এভাবে বিল করা হয়েছে, যা গ্রাহকের কাছে বেশি বিল মনে হচ্ছে। তবে যারা অফিসে বিল নিয়ে আসছেন তাদের বিল কিস্তি বা সংশোধন করে দেয়া হচ্ছে। ভোল্টেজ সমস্যা সম্পর্কে বলেন, ভুমি অফিসের ট্রান্সফরমারটি ওভার লোডেড তাই এখানে নতুন আরও একটি ট্রান্সফরমার লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।