সিলেটে অবুঝ শিশুর সামনে মাকে গণধর্ষণ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২০, ২:২০ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেটের কানাইঘাটে দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামে গত ১ জুলাই গভীর রাতে অবুঝ শিশুর সামনে মাকে অস্ত্র দেখিয়ে চোখ বেধে গণধর্ষণের মূল হুতা একাধিক ধর্ষণ সহ বিভিন্ন কুকর্মের সাথে জড়িত আজাদুর রহমান (২৫) ও তার সহযোগী জাকারিয়া (৩৫) কে দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। গৃহবধূকে এই দুই নরপশু কর্তৃক গণধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ধর্ষণকারী আজাদের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় এমন জঘন্য ঘটনার প্রতিবাদও করতে পারছেন না নিরীহ দরিদ্র ভিকটিমের পরিবার ও তাদের স্বজনরা।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত বুধবার (১ জুলাই) রাত ১টার দিকে ব্রাহ্মণগ্রামের প্রভাবশালী নুর উদ্দিনের ছেলে এলাকার চিহ্নিত লম্পট ও কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনাকারী আজাদুর রহমান ও তার সহযোগী হাসিম আলীর পুত্র মাদক ব্যবসায়ী জাকারিয়া মুখোশপরে একই গ্রামের গাছবাড়ী বাজারের মোদী ব্যবসায়ী স্ত্রী এক সন্তানের জননী গৃহবধূ (২২) কে প্রচন্ড বৃষ্টির সময় বাঁশবেতের বসত ঘরের পিছনের বেড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে গলায় অস্ত্র টেকিয়ে চোখ বেঁধে গণধর্ষণ করে। ঘটনার সময় ভিকটিমের স্বামী গাছবাড়ী বাজারে বৃষ্টির জন্য আটকা পড়েছিলেন। ৪ বছরের অবুঝ শিশুর সামনে যখন তার মাকে আজাদ ও জাকারিয়া মিলে গণধর্ষণ করছিল তখন ধর্ষণের স্বীকার গৃহবধূ বার বার চিৎকার করলেও বৃষ্টির কারণে আশপাশ ঘরের কেউ তা শুনতে পাননি। ধর্ষণকারিরা চলে গেলে গৃহবধূ বাড়ির লোকজনকে ঘটনা জানালে রাত ২টায় ভিকটিমের স্বামী হারুন রশিদ সংবাদ পেয়ে বাড়িতে এসে স্ত্রীর কাছ থেকে সবকিছু শুনেন।
পরদিন সকালে ভিকটিমের অসহায় স্বামী ধর্ষণকারী আজাদের পরিবারের কাছে বিচারপ্রার্থী হলে উল্টো তারা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁড়িয়ে দেন। এতে নিরুপায় হয়ে পাশবিকতার স্বীকার তার স্ত্রীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) তে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভর্তি করেন। প্রভাবশালী ধর্ষণকারী আজাদের পরিবারের ভয়ে অসহায় তার স্ত্রীর উপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনার বিচার প্রার্থী হন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে। কিন্তু আজাদের পরিবার বিচার মানেনি। উল্টো দরিদ্র পরিবারকে গ্রামে সমাজচ্যুত করা সহ নানা ধরনের ভয়ভীতি দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
এলাকার লোকজন আরো জানান, ধর্ষক আজাদ কয়েকবছর আগে পাশ্ববর্তী উজানীপাড়া গ্রামের এক গৃহবধূকে ধষণের চেষ্টা চালায়। এছাড়াও ২০১৫ সালে আজাদ তার বাড়ির পাশে থাকা দরিদ্র পরিবারের মেয়েকে ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে দিনেদুপুরে ধর্ষণ করে এবং একই একালার একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে ধর্ষণ করলেও তার পরিবার ও গোষ্ঠীপ্রতা বড় হওয়ার কারনে কোন ঘটনারই বিচার না হওয়ায় দিন দিন এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠে আজাদ। মধ্যখানে সে ওমানে চলে যায়, সেখানে কিছু থেকে বাড়িতে এসে পুণরায় সে সমাজবিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ে। কয়েকমাস পূর্বে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চাকুরীতে যোগ দিয়েছে আজাদ। বর্তমানে করোনা ভাইরাসারে কারনে বাড়িতে এসে আজাদ তার সহযোগী মাদক ব্যবসায়ী জাকারিয়াকে নিয়ে এলাকায় নানা ধরনের কুকর্মে লিপ্ত হয় এবং সর্বশেষ এই গৃহবধূকে দুইজন মিলে গণধর্ষণ করেও এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়া বেড়াচ্ছে তারা।
ধর্ষক আজাদের পিতা নুর উদ্দিন জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। শনিবার সকালে স্থানীয় বিচারের মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শামসুদ্দোহা পিপিএমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনার পর আমরা ঘটনারা ব্যাপারে সব ধরনের খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে এখনও ভিকটিমের পরিবার থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। ধর্ষণের মতো জগন্য ঘটনার জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুত্র: দৈনিক সিলেট