সিলেটে আইসিইউতে ফয়েজ ও রোকশানা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুন ২০২০, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ওয়েছ খছরু:
মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ। তার অবস্থা ভালো না। করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও উপসর্গ নিয়ে তিনি গত ৩ দিন ধরে আইসিইউতে রয়েছেন। স্বামী সিলেট জেলা বারের সভাপতি ও বিএনপি নেতা এটিএম ফয়েজও করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে। তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ডাক্তাররা জানিয়েছেন- এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজের ফুসফুস আক্রান্ত। ফলে তার অবস্থা নিয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এডভোকেট এটিএম ফয়েজ।
সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখ। সিলেট বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একজন তিনি। পাশাপাশি সিলেট জেলা বারের আইনজীবী। বর্তমানে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আর এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজও মহিলা দলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আইনজীবী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। পাশাপাশি তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র। সিলেটের দক্ষিণ অংশের তিনটি ওয়ার্ডের নির্বাচিত মহিলা কাউন্সিলরও। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে সিলেটের এই দম্পতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে মানুষের কাছাকাছি ছিলেন। পরিবারের উদ্যোগেই করোনায় ঘরবন্দি মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন। এই অবস্থায় গত দুই সপ্তাহ ধরে শরীর ভালো যাচ্ছিলো না এডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজের। তিনি সর্দি, জ্বরে ভুগছিলেন। এর কয়েকদিন পর এডভোকেট এটিএম ফয়েজেরও উপসর্গ দেখা দেয়। উপসর্গ দেখা দিলে তারা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন।
গত ২১শে জুন প্রাপ্ত রিপোর্টে জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট এটিএম ফয়েজের করোনা পজেটিভ আসে। তবে রোকশানার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। করোনা পজেটিভ এলেও এটিএম ফয়েজের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। আর নেগেটিভ রিপোর্ট এলেও রোকশানা বেগম শাহনাজের শারীরিক অবস্থা ততটা ভালো ছিলনা। তিনি শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। এদিকে,করোনা রিপোর্ট আসার পরদিন এডভোকেট এটিএম ফয়েজ নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চেকআপ করিয়ে বাসায় চলে আসেন। কিন্তু ওইদিন রোকশানার শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যায়। এ খবর পেয়ে পরিবারের স্বজন ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী গিয়ে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা প্যানেল মেয়র রোকশানা বেগম শাহনাজকে নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন- নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর এডভোকেট রোকশানাকে প্রথমে অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয়। ২২ তারিখ ভর্তি করার প্রথম দুইদিন তাকে এই চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রোকশানাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। আইসিইউতে নেয়ার পরও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। বরং অবনতি হচ্ছে। এ কারণে শনিবার দুপুরে রোকশানার শারীরিক বিষয় নিয়ে নর্থ ইষ্টের ডাক্তারদের বোর্ড মিটিং হয়।
সর্বশেষ ডাক্তাররা জানিয়েছেন- এডভোকেট রোকশানার ফুসফুসও আক্রান্ত। ফলে তাকে নিয়ে ডাক্তাররাও সন্দিহান। এদিকে, করোনা আক্রান্ত হলেও মাছুদিঘীরপাড়স্থ নিজ বাসায়ই ছিলেন জেলা বারের সভাপতি এটিএম ফয়েজ। তিনি বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বুধবার রাত থেকে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকেও নেয়া হয়েছে আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। সেখানে নেয়ার পর ডাক্তাররা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে দেখেন তারও অক্সিজেনের ‘কন্ডিশন’ ভালো না। পরে চিকিৎসকরা এটিএম ফয়েজকে আইসিইউতে ভর্তি করেন। এখনো তিনি আইসিইউতে রয়েছেন।
শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. চয়ন রায় জানিয়েছেন- এডভোকেট এটিএম ফয়েজের অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। কখনো কখনো অক্সিজেনের মাত্রা কমে আসে। শুক্রবার রাতেও তার শারীরিক অবস্থার একবার অবনতি হয়েছিল। তবে শনিবার সকাল থেকে তিনি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছেন। এদিকে এডভোকেট এটিএম ফয়েজ ও রোকশানা বেগম শাহনাজের সুস্থতা কামনায় দক্ষিণ সুরমায় দোয়া মাহফিল হয়েছে।