ফিরিয়ে দিলো নর্থইস্ট, পার্কভিউ, ওয়েসিস : অবশেষে পথেই মৃত্যু
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুন ২০২০, ৯:৪৫ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে নির্মমতার আরো একটি গল্প তৈরি করলো বেসরকারি হাসপাতালগুলো। তিন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অসহায় মৃত্যু হলো আরো এক রোগীর। এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতালে ঘোরাঘুরির পথে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মৃত্যু হয় তার। হেপী বেগম (৪৫) নামের ওই গৃহবধূ কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেইনের স্ত্রী। হেপী বেগম দুই ছেলে ও এক মেয়ের মা। বড় ছেলে কানাডা প্রবাসী।
জানা গেছে, কদিন ধরে অসুস্থ বোধ করছিলেন হেপী বেগম। বৃহস্পতিবার রাতে তার শরীর খারাপ হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ সুরমার চণ্ডিপুলস্থ নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর তার কিছু টেস্ট করানোর পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে চাইলেও সংশ্লিষ্টরা রাজি হননি। রোগী নিয়ে স্বজনরা বাড়িতে ফিরে আসেন। শুক্রবার হেপী বেগমের অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবার নিয়ে যাওয়া হয় নর্থ ইস্ট হাসপাতালে। তারা তাকে ভর্তি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উপায় না দেখে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় সিলেট নগরীর তালতলাস্থ পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখান থেকেও ফিরিয়ে দেওয়া হলে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় রোগীকে। রোগীর অবস্থা তখন ক্রমশই খারাপ হচ্ছিলো। নিয়ে যাওয়া হয় সোবহানীঘাটস্থ ওয়েসিস হসপিটালে। তারাও রোগীকে ভর্তি করতে রাজি হননি। হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে পথেই মৃত্যু হয় হেপী বেগমের।
দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের পাশাপাশি অন্যান্য রোগাক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়ার সরকারি কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু তবু শংকটাপন্ন অবস্থায় কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল খোকাকে ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তার স্বজনরা। হেপী বেগমের ছেলে শাহরিয়ার হোসেইন সজীব বলেন, আর্থিক সমস্যা না থাকলেও আমার মা বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন। এর বিচার আমরা কার কাছে চাইবো।
করোনা পরিস্থিতিতে সিলেটে হাসপাতাল থেকে রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়মিতই মিলছে। এ ধরনের ঘটনায় ইতিমধ্যে ৩ জনের মৃত্যুও ঘটেছে। সর্বশেষ শুক্রবার সকালেই ৪ হাসপাতাল ঘুরে মৃত্যু হয় নগরীর বন্দরবাজারের এই ব্যবসায়ীর নাম ইকবাল হোসেন খোকার। এর আগে, ৩১মে নগরীর ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে মৃত্যু হয় দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগা নগরীর কাজীটুলা এলাকার এক নারীর। সেদিনই মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে স্ট্রোক করে সিলেট আসা এক রোগী ৭টি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে মারা গিয়েছেন।সুত্রঃ একাত্তরের কথা