হবিগঞ্জে মাছ বিক্রেতার দুই সন্তানের সাফল্য, অভাবের কারণে কলেজে ভর্তি নিয়ে শঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২০, ৯:৩২ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছে আরিফুল ইসলাম রাকিব। ভালো ফলাফল করেছে রাকিবের ভাই আমিনুল ইসলাম রাজিবও। তারা নুরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মাছ বিক্রেতা মো. কদর হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, বাবার মাছ বিক্রিতে কোনোরকমে তাদের সংসার চলে। কদর হোসেনের চার ছেলের মধ্যে দুইজন এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। বড় ছেলে রাকিব জিপিএ-৫ পেলেও মেঝ ছেলে আমিনুল ইসলাম রাজিব অল্পের জন্য পায়নি জিপিএ-৫। সেঝ ছেলে জহিরুল ইসলাম সাজিব একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে আর ছোট ছেলে সাদেকুল ইসলাম মোজাম্মেল পড়ছে ৩য় শ্রেণিতে।
রাকিবের বাবা কদর হোসেন বলেন, আমার ছেলে রাকিবের ফলাফলে ভীষণ খুশি আমি, যা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ছেলেটা গরিব বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমি বিভিন্ন ডোবা-নালায়, খালে-বিলে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি। কখনও কখনও কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। আমার বড় ছেলে রাকিবও সংসার চলানোর জন্য প্রতিনিয়ত সাহায্য করে। আমি আমার ছেলেকে ডাক্তার বানাতে চাই। তবে আমার তো আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিভাবে কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।
এদিকে ছেলে জিপিএ-৫ পেলেও আনন্দের মাঝেই বাবার দুশ্চিন্তা কিভাবে ছেলেকে কলেজে ভর্তি করবেন, কলেজে ভর্তির টাকা কোথায় পাবেন।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন বলেন, মফস্বলের স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া এত সহজ কথা নয়। আরিফুল ইসলাম রাকিব খুবই মেধাবী একজন ছাত্র। সে আমাদের স্কুলের গর্ব।
তিনি বলেন, রাকিব সঠিক গাইডলাইন পেলে এবং ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলে ভবিষ্যতে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। আরিফুল ইসলাম রাকিব স্বপ্ন পূরণের পথে কেবলমাত্র প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। সফলতার সহিত পাড়ি দিতে হবে আরও অনেক পথ। সকল বাধা পেরিয়ে রাকিবের উচ্চশিক্ষার গণ্ডি পার হওয়ার জন্য দরকার সকলের দোয়া ও সহযোগিতা। নইলে অকালেই ঝরে পড়বে রাকিবদের মতো মেধাবীরা।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গাজীউর রহমান ইমরান বলেন, নিজের ইচ্ছাশক্তি থাকলে আর পরিশ্রম করলে যে ভালো ফলাফল করা যায় রাকিব তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় বাবার সঙ্গে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেও রাকিব জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভবিষ্যতে রাকিবের পড়াশোনার জন্য আমি তার পাশে থাকব।