জুড়ীর সেই চেয়ারম্যানকে অপসারণে তদন্তের জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে মন্ত্রণালয়ের চিঠি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০২০, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের জুড়ীর বিতর্কিত সেই উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুকের মন্ত্রণালয়ে পাঠানো কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পদ থেকে অপসারণের লক্ষ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ১৮ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (উপজেলা-২ শাখা) উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্যটি জানানো হয়।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি কালের কণ্ঠকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের এমনসব কর্মকাণ্ডের কালের কণ্ঠের অনলাইনে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
৪ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের প্রেরিত চিঠির সূত্রে বলা হয়েছে, গত ১ মে রাত ১০টায় মদ্যপ অবস্থায় জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুকের নেতৃত্বে উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে অবস্থিত ‘বন্ধু পোলট্রি ফার্ম’-এ বেআইনিভাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এসময় বাধা দিলে ফার্মের মালিক দীনবন্দু সেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এই ঘটনায় খামার মালিক দীনবন্দু সেনের প্রায় ৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে থাকা প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ধান কাটার হারভেস্টার মেশিনের যন্ত্রপাতি ভাঙচুর, লুটপাট করা হয়। এতে মেশিনের যন্ত্রপাতিসহ দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
এদিকে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন উপজেলার মানুষদের নিরাপদ রাখতে মাঠে তৎপর রয়েছেন সেখানে একজন উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে তাদের সহযোগিতা করার কথা থাকলেও তিনি করেননি। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে তার আস্তাভাজন সাইদুল ইসলামের কথা রাখতে গিয়ে হামলা ঘটিয়ে বিশাল গণজমায়েত সৃষ্টি করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সঙ্কটময় মুহূর্তে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির ঘটান। এই কারণে উপজেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮ {উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১ সালে সংশোধিত}-এর ১৩ ধারা অনুযায়ী কেন তাকে (উপজেলা চেয়ারম্যান) পদ হতে অপসারণের কার্যক্রম শুরু করা হবে না-এ মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
সেই চিঠির প্রেক্ষিতে গত ১২ মে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঈদ ফারুক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তার কারণ দর্শানোর জবাব অসন্তোষজনক প্রমাণিত হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মোঈদ ফারুকের বিরুদ্ধে আনীত অপরাধের কারণে উপজেলা পরিষদ আইন-১৯৯৮-এর ১৩ ধারা অনুযায়ী পদ হতে অপসারণের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের সদস্য ও মহিলা সদস্যদের (অপসারণ, অনাস্থা ও পদ-শূন্যতা ) বিধিমালা, ২০১৬ অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমানকে।