সিলেটে প্রসূতিকে রক্ত দিতে গাড়ি পাচ্ছিলেন না রক্তদাতা, এগিয়ে এলেন পুলিশের উপ-কমিশনার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ মে ২০২০, ৩:২৭ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
গ্রাম থেকে প্রসব ব্যথা নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন রিতা বেগম নামে এক প্রসুতি। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার কোল জুড়ে এলো দ্বিতীয় কন্যা সন্তান। অস্ত্রোপচারের সময় রক্তের প্রয়োজন পড়ে। কিনে ৩ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে আসা এ প্রসূতিকে।
এরপর চিকিৎসক জানালেন আরও রক্তের প্রয়োজন। ১ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া হয় স্ট্যাটাস। ব্যাপক সাড়াও মেলে ফেসবুকে। পুলিশের হেডকোয়ার্টারে কর্মরত সদস্য হাফিজুর রহমানের সহযোগিতায় প্রসূতিকে রক্ত দিতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আমির হোসেন রাজি হলেন। তবে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় করোনা ভাইরাসের কারণে যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
ফলে যানবাহন মেলানো দায় হয়ে পড়ে। তখন সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসার কাছে ফোন করে বিস্তারিত জানানো হয়। এমন কথা শুনে নিজ উদ্যোগে রক্তদাতাকে তার নিজ বাসা থেকে হাসপাতালে প্রেরণ করা ও রক্তদান শেষে বাসায় ফেরানোর উদ্যোগ নেন জেদান আল মুসা।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) ইফতারের পর রক্তদাতাকে সিলেট মহানগরীর আরামবাগ থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান জেদান আল মুসার প্রেরিত পুলিশ বাহিনী। সিওমেক হাসপাতালে প্রায় ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করে রক্তদান শেষ করলেন আমির। এসময় রক্তদান করতে কিছু আর্থিক খরচ হয়। ওই আর্থিক খরচ জেদানের পক্ষ থেকে হাসপাতালের কোষাগারে জমা দেন পুলিওশর এক সদস্য। রক্তদান শেষে প্রসূতিকে জুসও কিনে দেয় জেদান আল মুসার টিম।
দীর্ঘ ২ ঘণ্টা পর রক্তদাতাকে বাসায় পৌঁছে দেয় এসএমপিতে কর্মরত ওই পুলিশ কর্মকর্তার প্রেরিত সদস্যরা। এ নিয়ে খুশি প্রসূতি পরিবারের লোকজন। এমন পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় রক্তদাতা ও পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানায় প্রসুতির পরিবার।
রক্তদাতা আমির হোসেন বলেন, আমি রক্ত দিতে রাজি হলেও সন্ধ্যার দিকে করোনাভাইরাসের কারণে যানবাহন পাচ্ছিলাম না। ফলে আমার রক্ত দেওয়া নিয়ে আমি চিন্তিত হয়ে পড়ি। তখন পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এসে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং রক্তদান শেষে বাসায় ফিরিয়ে দেন। যথাসময়ে পুলিশের সহযোগিতায় রক্ত দিতে পারায় আন্তরিকভাবে খুশি। পুলিশের এমন আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ। এজন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা বলেন, আমি মুঠোফোনে বিস্তারিত জেনে আমাকে বহনকারী রাষ্ট্রীয় গাড়ী ও বডিগার্ডকে পাঠিয়ে রক্তদাতাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। রক্তদান শেষে বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে এসেছেন আমার সদস্যরা। আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে এমন কাজ করেছি। নগরবাসীর যেকোনো সমস্যায় পাশে আছে সিলেট মহানগর পুলিশ এমন আশার কথা জানালেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।