সাবধান, ডেঞ্জার সিলেট: ভয়ঙ্করভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০২০, ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ
জাহেদ আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেট এখন ডেঞ্জার জোন! লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সিলেটবাসীর কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। সবার মনে আতঙ্ক। সিলেট অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে ও মৃত্যুমিছিল ঠেকাতে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও কাজ হচ্ছে না একটুও। বরং প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের রোগী পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় করোনো উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা!
কয়েকদিনের ব্যবধানেই সিলেটের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪৯ জনে। গতকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ৩৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আজ একলাফে সিলেট অঞ্চলে নতুন করে আরো ১৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
গোটা সিলেট জুড়ে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা আতংক। নতুনদের নিয়ে সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ৪৯ এ। হঠাৎ করে এভাবে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াকে করোনার ডেঞ্জার জোন বলে বিবেচিত করছেন কেউ কেউ।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল সিলেটকে লকডাউন ঘোষণা করা হয় । এতে করে বাইরে থেকে সিলেটের ভেতরে প্রবেশ ও সিলেট থেকে বাইরের জেলায় যাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা হয়।
তবুও সিলেট অঞ্চলে বিভিন্ন অজুহাতে ঢুকছেন মানুষ। আর এ পর্যন্ত সিলেটে যারাই আক্রান্ত তাদের বেশিরভাগ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও অন্যান্য জেলা থেকে আগত।
এদিকে, লকডাউনের মধ্যে ট্রেন আসার ক’দিন পরেই এবার ঢাকা থেকে আসলো একটি যাত্রীবাহী বাস। বৃহস্পতিবার ২৩ এপ্রিল রাত সোয়া ৮ টায় এই ঘটনা ঘটে। কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকাসুত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সকল বিধিনিষেধ অমান্য করে প্রায় বরিশাল ও ঢাকা থেকে চল্লিশজন যাত্রী নিয়ে অগ্রদূত নামের একটি বাস বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সিলেট কদমতলী বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছায়।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮টার সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায়। বিকেল চারটায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যাক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র।তিনি জানান, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য মৃত ব্যাক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে চতুর্থ ধাপ। অর্থাৎ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। সিলেট অঞ্চলে এখন সেই চতুর্থ ধাপের বিস্তার চলছে। এ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় লকডাউন মান্য ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং পারলে গৃহবন্দি থাকা।
সিলেটে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী জনপ্রিয় মেডিসিন চিকিৎসক ডা. মইন উদ্দিন। তিনি সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের সহকারি অধ্যাপক। ৫ এপ্রিল ঢাকা থেকে ওই চিকিৎসকের রিপোর্ট আসে পজেটিভ। পরবর্তীতে ৭ এপ্রিল সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি করা হয় ওই চিকিৎসককে। এরপর ৮ এপ্রিল তিনি ঢাকার কুর্মিটুলা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে চিকিৎসার জন্য সিলেট ত্যাগ করেন। এরপর ১৫ এপ্রিল ভোর সাড়ে ৪টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর ডা. মইন উদ্দিনের লাশ সংক্রমন বিধি অনুযায়ী গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।