ফেঞ্চুগঞ্জে অনাহারে বেদে পরিবার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০২০, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় চলমান করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে বেকার অবস্থায় ঘরে বসে দিন কাটাচ্ছেন গরিব অসহায় বেদে পরিবারের লোকজন। সহায়তার অভাবে তারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়কের পাশে ১ নম্বর সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরদিকে কুশিয়ারা নদীর পাড়ে বেদেপল্লীর অবস্থান। এখানে ৭টি পরিবারের প্রায় ৬০ জন লোক বসবাস করেন। তারা বিগত দেড় যুগ ধরে এখানে বসবাস করছেন। নারী-পুরুষ সবাই যে যার মতো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেউ কবিরাজি করে সংসার চালান, কেউ ঝাড়ফুঁক ও তাবিজ বিক্রি করে সংসার চালান, কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিঙ্গা দিয়ে রোগের চিকিৎসা করেন। তাদের সকলের প্রতিদিন যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালান।
এখানকার বেদে সর্দার জজ মিয়া জানান, করোনার প্রভাবে সরকার এলাকা লকডাউন করে দিয়েছে। লকডাউনের পর থেকে তাদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় তারা কষ্টে দিন পার করছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এ অবস্থার পরও কারও কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছি না। আজ প্রায় মাসের কাছাকাছি আমাদের ব্যবসা বন্ধ আছে। আমরা একবেলা খেয়ে দুইবেলা না খেয়ে দিনযাপন করছি। গত কয়েকদিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের দুই ব্যাগ ত্রাণসামগ্রী দেন, যা আমরা সবাই ভাগ করে নেই। আরও একটি সংগঠন থেকে আমাদের ত্রাণ দিয়েছে। এরপর আর কেউ কিছু দেয়নি। আমরা সরকারের দায়িত্বশীল লোকজনকে বলেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী সকলকে আমাদের কষ্টের কথা বলেছি। সবাই আমাদের হিসাবও নিয়েছেন। অথচ কোনো সহযোগিতা আজও পাইনি। আমাদের অবস্থা সবাই দেখছে। তারপরও কোনো জনপ্রতিনিধি আমাদের কোনো সহযোগিতা করেননি, কেউ খবরও নেননি। আমরা ধার-দেনা করে একবেলা খেয়ে দিন পার করছি।
তিনি আরও বলেন, সমাজের বিত্তবানদের কাছে আমাদের আবেদন আমাদেরকে কিছু সাহায্য করুন। আমরা খুব কষ্টে আছি।
এ ব্যাপারে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রজত দে’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই সময়ে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। তবে আগামী সপ্তাহে যখন ত্রাণ বিতরণ করা হবে, তখন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী বদরোদ্দোজা বলেন, বেদেদের কোনো তালিকা আমার কাছে আসেনি। এলে তাদের ত্রাণ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। মেম্বার তালিকা দিলে অবশ্যই তারা ত্রাণ পাবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী আহমদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।