শায়েস্তাগঞ্জে করোনা আতঙ্কে ভরসা এখন পল্লী চিকিৎসক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০২০, ৭:০৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
করোনা আতঙ্কে প্রায় চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়েছে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা। লকডাউন ও করোনার ভয়ে সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে রোগীরা ছুটছেন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কিন্তু সেগুলো বন্ধ করে অন্তরালে গেছেন চিকিৎসকরা। করোনার আগে শুধু এই উপজেলাই নয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকেও প্রতিদিন শত শত রোগী আসছেন এসব প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
করোনার আতঙ্কে ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে উপজেলার পিপলস মেডিকেল সার্ভিস, গাউছিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মেডিল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অন্য প্রাইভেট চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো। তাই ভরসা কেবল পল্লী চিকিৎসকরা। তাদের কাছে কিছুটা হলেও পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
রোগীদের অনেকেই বলছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সদর হাসপাতালে না গিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে এসেছেন তারা। কিন্তু এখানেও ডাক্তার না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে। করোনার আগে ঢাকা ও সিলেটের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা সপ্তাহে দু’দিন এসে রোগী দেখতেন, তারাও এখন আর আসেন না। এতে এসব চেম্বারের নিয়মিত রোগীরা পড়েছেন সংকটে। জটিল রোগে আক্রান্ত অনেকেই ডাক্তারকে ফোনেও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।এমন অবস্থা চলতে থাকলে করোনা নয় বরং সাধারণ অসুখেই বহুলোকের প্রাণ যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কয়েকজন চিকিৎসক জানান, করোনার ভয়েই মূলত ব্যক্তিগত চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ পিপলস মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের পরিচালক আমিনুল আনোয়ার বলেন, কোনো ডাক্তার না আসায় এবং নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পি.পি.ই) সংগ্রহ করতে না পারায় নিরাপত্তার স্বার্থে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রেখেছেন তারা।
তবে এসব সংকটের মাঝেও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মধ্য অলিপুরে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল খোলা রয়েছে। বাদবাকি সবগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাদ্দাম হোসেন বলেন, শায়েস্তাগঞ্জে উপজেলা হাসপাতালটির কাজ শেষ না হওয়ার কারণেই এমন সংকট। তবুও আমরা সাধ্যমতে চেষ্টা করছি যাতে একজন রোগীও চিকিৎসাবঞ্চিত না হয়।
বর্তমানে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ থাকায় রোগীরা চিকিৎসা নিতে ছুটছেন ১৫ কিলোমিটার দূরের হবিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে। চলমান অঘোষিত লকডাউনের মাঝে এতদূরে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব বলছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে এমন জরুরি মুহূর্তে প্রাইভেট চেম্বার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করে দেয়াটা অমানবিক বলছেন হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জল। চিকিৎসাসেবা দিতে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনার পরও যারা অনুপস্থিত থাকছেন তাদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।