সিলেটে ‘সন্ধান’ মিলছে না সেই করোনা রোগীর
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ এপ্রিল ২০২০, ৬:০৩ অপরাহ্ণ
ওয়েছ খছরু:
সিলেটের করোনা আক্রান্ত সেই রোগীর ‘সন্ধান’ মিলছে না। তিনি কোথায় আছেন জানে না কেউ। এমনকি তার দ্বারা আক্রান্ত চিকিৎসকও তার হদিস দিতে পারছেন না। ফলে ওই রোগীর খুজে রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে আক্রান্ত চিকিৎসকের তথ্য অনুযায়ী ১৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সবার রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থ্যাৎ কেউ করোনা আক্রান্ত হননি। এরপরও বসে নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা আরো কয়েকজনের করোনা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় শুক্রবার বিকেলে জানিয়েছেন- ‘চিকিৎসকও বলতে পারছেন না তিনি কীভাবে করোনা আক্রান্ত হলেন। ওই চিকিৎসক সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও তার ইবনে সিনার চেম্বারে ২ এপ্রিল পর্যন্ত রোগী দেখেছেন।’ তিনি জানান-‘স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে আক্রান্ত চিকিৎসকের পরিবার, গাড়ি চালক, বাসা ও চেম্বারের কাজের লোক, তার চিকিৎসা নিয়েছেন এমন কয়েকজন রোগীসহ ১৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু কারো রিপোর্ট পজেটিভ আসেনি।’
উপ পরিচালক জানান- পরীক্ষায় ধরা পড়েনি তার মানে এই নয় যে, এদের দ্বারা সংক্রমণ হয়নি। ‘উপসর্গ’ প্রকাশ হচ্ছে না। এরপরও আমরা ওদের ‘অভজারভেশনে’ রেখেছি। প্রয়োজন হলে আবার পরীক্ষা করা হবে। তিনি জানান- চিকিৎসক আক্রান্তের তথ্য জানতে আরো কয়েকজনকে পরীক্ষা করা হবে। শনিবার সেটি করা হতে পারে।
২রা এপ্রিল শরীরে উপসর্গ বিদ্যমান থাকায় নিজেই এসে আইইডিসিআরে রক্ত ও মুখের লাল নমুনা দেন সিলেটের করোনা আক্রান্ত ওই চিকিৎসক। এরপর থেকে তিনি নিজ বাসাতে কোয়ারেন্টিনে চলে যান। এমনকি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় ৪ঠা এপ্রিল ঢাকা থেকে তার রিপোর্ট আসে। এতে ধরা পড়ে তিনি করোনা আক্রান্ত। এরপর থেকে নিজ বাসাতেই কোয়ারেন্টিন মেনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ওই চিকিৎসক। মঙ্গলবার রাতে তার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হলে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে পরিবারের উদ্যোগে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পারিবারিক সূত্র জানায়- করোনা আক্রান্ত ওই চিকিৎসক এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে তিনি কীভাবে আক্রান্ত হলেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে তার কর্মস্থল। অন্যটি বাসা। কর্মস্থলের পাশাপাশি তার বাসায় কোনো অতিথি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন কী না- সেটিও খুজে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে খবর মিলেছে তিনি আক্রান্ত হওয়ার আগে তার বাসাতে প্রবাস ফেরত স্বজনও এসেছিলেন। এই স্বজনের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন বলে জানান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন- একমাত্র রোগী হিসেবে সিলেটে চিহিৃত হয়েছেন ওই চিকিৎসক। সুতরাং তিনি যার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তাকে এখনো চিহিৃত করা যায়নি। ফলে বাইরে থাকা ওই রোগীর মাধ্যমে কত সংখ্যক মানুষ ‘এফেক্টেড’ হয়েছে তার বলা মুশফিক। এ কারনে ওই রোগীকে চিহিৃত করা এখন মুল চ্যালেঞ্জ।