রাজনগরে লকডাউন ভেঙ্গে বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ৯:৪৮ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৌলভীবাজারের রাজনগরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর উপজেলার পাঁচ গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। সচেতনতার অভাবে সাধারণ মানুষ লকডাউন না মেনে অবাধে চলা ফেরা করছে। হোম কারেন্টিনের নিয়ম মানছে না অধিকাংশ লোকজন। ওই এলাকার আটকে পড়া খেটে খাওয়া দিনমজুর সাধারণ মানুষ পড়েছে বিপাকে। তারা সরকারী সাহায্যের দাবীতে জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে খাদ্যর দাবীতে বিক্ষোভ প্রকাশ করেছে। গ্রামের মানুষগুলো বাইরে বের না হলেও নিজেদের মধ্যে অবাধ চলাফেরা করছে। এতে ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়ন এর আকুয়াগ্রামের এক ব্যক্তি (ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী) গত শনিবার সকালে করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। টেস্ট রির্পোট করোনা পজেটিভ হয়। রোববার রাতে রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই উপজেলা প্রশাসন ভাঙ্গারহাট বাজারের আশেপাশের পাঁচটি গ্রাম লকডাউন করে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। ওই গ্রামগুলোর হলো আকুয়া, সৈয়দনগর, গয়ঘর, ডলা, গনেশপুর।
এদিকে লকডাউন করার পর ওই এলাকার খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই ভুগছেন খাদ্যসংকটে। বিত্তবান কিছু লোক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
এছাড়াও লকডাউন কৃত এলাকায় লোকজন জন একে অপরের সাথে মিলিত হচ্ছেন। ওই গ্রাম গুলোর মানুষদের ঘরে থাকা নিশ্চিত না করায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি লকডাউনকৃত সৈয়দনগর গ্রামের মাহমুদুর রহমান বলেন, লকডাউন হলে কি হবে মানুষজন অবাধ যাতায়াত চলাফেরা করছে। একে অপরের সাথে মিশছে। ফলে ভাইরাস সংক্রমণ আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে একটি ভিডিওতে দেখা যায় লকডাউন কৃত এলাকার লোকজন জড় হয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য পৌঁছানোর জন্য বিক্ষোভ করছে।
অপরদিকে রাজনগর থানা পুলিশ লকডাউনকৃত এলাকায় বাহির থেকে ক্রয় করে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছিয়ে দিচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা হয়েছে যাদের খাদ্য শেষ হবে তারা ফোন করলে তাদের ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেয়া হবে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল হাসিম বলেন, লকডাউনকৃত গ্রামের সাধারণ মানুষদের খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। ইউপি চেয়ারম্যান টিপু খান তালিকা করে দিচ্ছেন আমরা এগুলো পৌঁছে দেব। যাদের আত্মীয়-স্বজন বাইরে থেকে খাদ্য দেওয়ার জন্য আসছেন, আমরা ওই খাদ্যগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। এছাড়াও যারা বাজার করতে চাচ্ছে আমরা তাদের বাজার করে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসছি।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) উর্মি রায় বলেন, লকডাউনকৃত গ্রামে লোকজনদেরকে কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার জন্য বলা হয়েছে । কিন্তু এরপরও অনেকেই মানছেন না। নিজেরা সচেতন না হলে কারোরই কিছু করার নেই।
জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে তালিকা করা হচ্ছে। তালিকার কার্যক্রম শেষ হলে শিগগিরই সরকারি ভাবে তাদের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই খাদ্য সহায়তা করে যাচ্ছেন।