বিশ্বব্যাপী করোনা আতংক, তাও থামছে না সারাদেশে এনজিওদের সুদি লেনদেন
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মার্চ ২০২০, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
জাগির হোসেন, বালাগঞ্জঃ
সারাবিশ্বব্যাপী আতংকে রয়েছে মানুষ। সর্বপ্রকার মানুষ এটিকে আল্লাহ প্রেরিত গজব বলে আখ্যা করছেন। বিশ্বের অমুসলিম দেশ গুলোতে আল্লাহর প্রেরিত নিয়ম নীতি, বিধি-বিধান মেনে চলছে। সম্প্রতি কালে ঘর-বাড়ি থেকে ভয়ে বের হচ্ছে না মানুৃষ। যেখানে সরকারের সব ধরনের সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চলছে। এটি প্রতিহত করার জন্য যেখানে সরকার হিমসিম খাচ্ছে।
রাস্তায়, হাটে-বাজারে, দোকানে, গাড়িতে, সরকারি দপ্তরে নেই আতংকে মানুষ। অনাহারে অর্ধাহারে থাকার উপক্রম হয়ে ওঠেছে। দিন শেষে গাড়ির মালিক কে ভাড়া দিয়ে, নেই তাঁদের কাছে ১ কেজি চাল,ডাল কেনার টাকা। এরই মধ্যে চলছে গ্রামীনব্যাংক, আশা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক সহ প্রবাসী ঋণ সংস্থা ও ব্যাংক সহ অসংখ্য ঋণ সংস্থা ব্যাংকে চলছে অনৈসলামিক সুদি লেনদেন, ঋণগৃহীতার দেওয়া লাগছে কিস্তি।
করোনা (নোবেল-১৯) ভাইরাসের কারণে যেখানে সরকার তার জনস্বার্থে জরুরী সবধরনের ধর্মীয় অনুষ্টান (ওয়াজ,মাহফিল, পূজা,শ্রাদ্ধ) সামাজিক বন্ধন(বিয়ে-সাঁদি), স্কুল,মাদ্রাসা, কলেজসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আরো বন্ধ হতে চলছে অপরিত্যাক্ত দোকানপাট, কলকারখানা, গার্মেন্টস করার।
কিন্তু এত কিছুর পরও থামছে না বেসরকারি ব্যাংকের অনৈসলামিক সুদি লেনদেন,এমনকি দেওয়া লাগছে কিস্তি। আমাদের বিপদ আমরাই ডেকে এনেছি হারাম লেনদেন করে।
ইতিমধ্যে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে ব্যাংকের সকল কিস্তি জুন পর্যন্ত স্থগিত। না হলে নিরিহ ঋণ গ্রহীতা মানুষ করোনায় নয় – কিস্তির জ্বালায় মরবে !
দেখা যায় যে, অনেক ঋণ গৃহিতা ঋণ তুলে দোকানপাট দিয়েছে , আবার অনেক কলকারখানা ও গার্মেন্টস কর্মীরা ঋণ তুলে ছেলে – মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন, আবার অনেকে পরিবারের কাজে লাগিয়েছেন আর কলকারখানা ও গার্মেন্টসে কাজ করে মাস শেষে বেতন পেয়ে তারা কিস্তি দিচ্ছেন, আবার পরিবারের খরচের টাকাও দিতে হচ্ছে – আর এখন যদি কলকারখানা ও গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায় তাহলে তারা একেবারে বিপদে পড়ে যাবে ! যেমন মরার উপরে খড়ার ঘা।
অন্যদিকে অনেক প্রবাসীরা ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে অনেকে আবার বাড়ি বন্ধক রেখে প্রবাসে পাড়ি দিয়ে পরিবারের অসচ্ছলতা দূর করতে, পারিবারের সদস্য মুখে এক মুঠো ভাত তুলে দিতে কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রবাসেও কাজ বন্ধ। দেশে করোনা আতঙ্কে সরকার নির্দেশ অনুযায়ী সভা সমাবেশ কোন জামায়াত বা হাট বাজারে এমনকি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বাহিরে না বেড়ানো অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীত হচ্ছে কিস্তি তুলার সময়।
দেখা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত পরিবারের ভিতরে প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহন করেছে স্বীয় নানান তাগিতে। এসব এনজিও বা ব্যাংক গুলো প্রতিদিন গ্রামের অসহায় ঋণগৃহীতাদের বাড়িতে গিয়ে কিস্তি তাগাদা দিচ্ছে। যেখানে মানুষের কাজ নেই, এমনকি ভয়ে কোন মানুষ কাজে যাচ্ছে না। সেখানে তারা কিস্তি দিবে কিভাবে? একদিকে জিনিসপত্র অতিরিক্ত দরদাম অন্যদিকে কিস্তির জালা। বালাগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ গরিব শ্রমজীবী ও মৎস্যজীবী লোক এখন বেকার। মাছের বাজারে আগুন বিক্রি হচ্ছে না মাছ ও কাজের জন্য লোক নিচ্ছে না। এমন অবস্থায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় এনজিও বা ব্যাংক কর্মীদের কিস্তির টাকার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অনেক ঋণ গ্রহীতা ও নারী, পুরুষ।
এব্যাপারে বালাগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, উজেলা চেয়ারম্যান হাজী মোস্তাকুর রহমান মফুর বলেন- গ্রামীনব্যাংক, আশা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক সহ প্রবাসী ঋণ সংস্থা ও ব্যাংক সহ অসংখ্য ঋণ সংস্থা সকল কিস্তি স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করছি। তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছে আমার আকুল মিনতি, এবিষয়ে যথারীতি একটি ব্যবস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
এব্যাপারে, বালাগঞ্জ গ্রামীণব্যাংক ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মোঃ বোরহান উদ্দিন বলেন, এই মহামারিতে সরকারের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম। কেন্দ্রের নির্দেশনানুযায়ী বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে জন্য আমরা সচেতনতা মূলক লিপলেট ও জনসংযম বিহীন আলোচনা সবার কাছে প্রচার করছি। গ্রামীণব্যাংকের জি.এম’র নির্দেশনা ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারি না।
এব্যাপারে, বালাগঞ্জ আশা ব্যাংক ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মোঃ জয়নাল আবেদীন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনানুযায়ী বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে জন্য আমরা সচেতনতা মূলক লিপলেট ও জনসংযম বিহীন আলোচনা সবার কাছে প্রচার করছি। তবে উর্ধ্বতম কর্মকর্তার নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কিস্তি নেওয়া কার্যক্রম চলতে থাকবে।