মৃত্যু ফাঁদ সিলেট মহাসড়ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মার্চ ২০২০, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। প্রতিদিনই এ মহাসড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন যাত্রী। মারাত্বকভাবে আহত হয়ে পঙ্গু হওয়ার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। শুক্রবার এই সড়কের নবীগঞ্জের কান্দিগাঁও নামকস্থানে একই পরিবারের ৯ জন নিহত হয়েছেন। এদিন সকালে সিলেটগামী একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নারায়নগঞ্জ থেকে সিলেটের হযরত শাহজালাল মাজারগামী ওপর একটি মাইক্রো যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে তারা মারা যান। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছাড়াও দেশের অন্যান্য মহাসড়কে ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
শুক্রবার সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ২৩ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নবীগঞ্জে ৯, বিজয়নগরে ৬, সাভারে ২, ময়মনসিংহে ২, ফেনিতে ১, পটুয়াখালীতে ২, ভোলার লালমোহনে ১ জন রয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অনেকে।
জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের কান্দিগাঁও নামকস্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৯ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় সিলেটগামী একটি মাইক্রোবাস (নং ঢাকা মেট্রো-চ ১৯-৫৪৬২) গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাইক্রো চালকসহ ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত ৯ জনের মধ্যে আটজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ইমন খান, তার বাবা আব্বাস উদ্দিন, আত্মীয় রাজীব, মহসিন, রাব্বী, আসমা, ইমরান ও সুমনা। এদের মধ্যে সুমনা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বাকিরা ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় মহাসড়কের আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল, সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহত মাইক্রো যাত্রীরা বৃহস্পতিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার পাগলা ফতুল্লা থেকে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাইয়ে পাত্রী দেখার জন্য যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। দ্রুতগামী মাইক্রো উল্লিখিতস্থানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে বড় একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বর ইমরান খান ও তার পিতা এবং সহোদরসহ একই পরিবারের ৮ জন নিহত হন। এ ঘটনা শিশু ও চালকসহ আরো ৫ জন আহত হন। খবর পেয়ে গোপলার বাজার ফাঁড়ির পুলিশ, শেরপুর হাইওয়ে এবং নবীগঞ্জ থানার পুলিশ ও ফায়ার ব্রিগেডের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ নিয়ে শেরপুর হাইওয়ের পুলিশের ওসি এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, দ্রুতগামী মাইক্রোবাসটি একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মোবাইল ফোনে পুলিশকে জানিয়েছেন ইমনের বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। হবু কনেকে আঙটি পরাতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যাচ্ছিলেন তারা। তিনি জানান, লাশগুলো শেরপুর হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে নিহতদের স্বজনরা নবীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তারা এলেই মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ইমনের স্থায়ী ঠিকানা বরিশালে হলেও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থাকতেন বলেও জানান তিনি।