গ্রীসের মর্গে বালাগঞ্জের ফয়সলের লাশ : আদরের সন্তানের মুখ দেখতে অপেক্ষায় বাবা-মা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ৭:৫৮ অপরাহ্ণ
বালাগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজোড় ইউনিয়নের রাজাপুরের এনামুল এহসান জায়গীরদার ফয়সল (৩০)। এক মুঠো স্বপ্ন নিয়ে ওমান থেকে তুর্কি হয়ে গ্রিসের পথে রওয়ানা দিয়েছিলেন। তবে দালালদের হাত ধরে পাড়ি জমানো ফয়সলের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। গ্রিসের মাটিতে পা রাখতে না রাখতেই চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে গেছে তাঁর স্বপ্ন। হবেই না বা কেন? অতিরিক্ত ঠান্ডা আর খাবার সংকটে স্বপ্ন গুলোকে ঐখানেই বরফ চাপা দিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। নিয়তির লিখনে যাত্রা পথেই থেমে গেল তাঁর দেহঘড়ি।
বালাগঞ্জের ফয়সলের মরদেহ এখন গ্রিসের আলেকজান্ডার পলি নামক হাসপতাালের হিমঘরে। সন্তানের অনাকাঙ্খিত এমন মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে পাগলপ্রায় বাবা-মা। শেষবারের মতো আদরের সন্তানের মুখ দেখতে চান বাবা মহুদ আহমদ জায়গীরদার ও মা খেলা বেগম চৌধুরী। কবে লাশ দেশে আসবে? অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তারা।
গ্রীসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন- বাংলাদেশ দুতাবাসের মানবিক আবেদন সাড়া দিয়ে গ্রীস প্রশাসন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রযুক্তির সহযোগীতায় ফয়সলের লাশ পড়ে থাকা স্থানে তোলা ছবির সূত্র ধরে গ্রীসের আলেকজান্ডার পলি সীমান্তে পাহাড়ী এলাকাটি চিহ্নিত করা হয়। মারা যাওয়ার ৬দিন পর অনেক চেষ্টা করে ১২ ফেব্রুয়ারি বরফের নীচ থেকে হেলিকপ্টার দিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে আলেকজান্ডার পলি নামক হসপিটালে হন্তান্তর করা হয়। গ্রীসের মর্গে পড়ে থাকা ফয়সলের লাশ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফয়ছলের ছোট ভাই রাজিমুল এহসান জায়গীরদার রুজেল ও ফয়ছলের সহযাত্রী এক যুবকের বরাত দিয়ে জানান-গত ০৪ ফেব্রুয়ারি ফয়ছলসহ কয়েকজন গ্রীসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে গ্রীসের সীমানায় পৌঁছলে, ০৭ ফেব্রুয়ারি গ্রীসের সময় বেলা ২ টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সহযাত্রীরা মুঠোফোনে মৃত দেহের সাথে ওই স্থানটির ছবি তুলেন। গত ০৯ ফেব্রুয়ারি সহযাত্রীরা ফয়ছলের বাড়িতে মৃত্যুর সংবাদটি জানিয়ে সেখানে তোলা ছবিগুলো পাঠান।
বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা শেষবারের মতো দেখতে চান ফয়সলের মুখ। এজন্য তারা ফয়সলের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।