মৌলভীবাজারে চা শ্রমিকদের ইংরেজিতে চিঠি, আদালতের নির্দেশ অমান্য
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:২৪:৫০,অপরাহ্ন ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কয়েকটি চা বাগানের শ্রমিকদের কাজে কিংবা কোম্পানীর নিয়ম পালনে কোন ব্যতয় ঘটলে বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদেরকে ইংরেজিতে বিভিন্ন নোটিশ প্রদান করে। অভিযোগপত্র ইংরেজিতে থাকায় নিরক্ষর চা শ্রমিকরা ভোগান্তি ও হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে। বাংলা ভাষায় চিঠি দেয়ার আদালতের নির্দেশনা থাকলেও এ নিয়ম মানছে না কয়েকটি বাগান।
১৯৫২ সালে সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের আত্মবলিদানে বাঙ্গালী জাতি মাতৃভাষার স্বীকৃতি অর্জন করে। তাই সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। বর্তমানে সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও মানা হচ্ছে না চা বাগানগুলোতে।
চা শ্রমিক সবিতা, অর্চনা, দেওরাজ, স্বরসতিসহ অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই আমরা চা শ্রমিকরা লেখাপড়া তেমন জানি না। কিন্তু কোম্পানীর চিঠি ইংরেজিতে থাকায় নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দিতে বিভিন্ন লোকের কাছে ধর্না দিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের। তারা আরও বলেন, শ্রমিকদের কেউ কেউ কোন মতে নাম লিখতে শিখেছে। তবে ইংরেজি বুঝার মতো চা বাগানে দু’একজন লোক খোঁজে পাওয়া অনেক কঠিন।
জানা যায়, বিটিশ আমলে সবগুলো চা বাগানে ইংরেজিতে শ্রমিকদের চিঠি দেয়া হতো। বর্তমানে কিছু বাগান বাংলা ব্যবহার করলেও ডানকান ব্রাদার্সের মালিকানাধীন চা বাগান সমূহে আদালতের নির্দেশনার পর এখনও ইংরেজিতে চা শ্রমিকদের চিঠি প্রদান করছে।
আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ইংরেজিতে চিঠি প্রদান বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের সকল আদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের প্রদত্ত আদেশের সুস্পষ্ট লংঘন বলে আমি মনে করি।’
এ ব্যাপারে শমশেরনগর ও আলীনগর চা বাগান ব্যবস্থাপকদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।