সিলেটে ডাক্তারের চেম্বারে কেউ গরুর সিনা, কেউ রান কিনছেন!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৬:২৪,অপরাহ্ন ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সুরমা নিউজ:
চিকিৎসা একটি মহান পেশা। এটি অন্য সব পেশা থেকে স্বতন্ত্র। এই পেশার সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণ সম্পর্ক। মানুষের কাছে সৃষ্টিকর্তার পরেই ডাক্তারদের স্থান । সম্মানের এই স্থানটি অক্ষুণ রাখা ডাক্তারদের অন্যতম প্রধান কাজ।
অথচ কিছু কিছু সিনিয়র চিকিৎসকের আচরণ আর কসাইয়ের আচরণে কোন তফাৎ নেই।
আজ সিলেটের একজন সিনিয়র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে আমার ফুফুকে নিয়ে গিয়েছিলাম।
সকালে ফোন দিয়ে ৬২ নং সিরিয়াল নিয়েছি,গিয়ে দেখিয়ে ৮২ পর্যন্ত দেয়া হয়েছে।
কোনভাবে এটেনডেন্স ম্যানেজ করে ১৭ নাম্বারের সাথে ডাক আসলো প্রথমে এক সহযোগী একজন একজন করে প্রেসার মেপে রোগীর হিস্ট্রি এন্ট্রি করে অপেক্ষা করতে বললেন।এরমধ্যে ডাক্তার রুমে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত দেখা চলছে।ঘন্টা খানিক পরে ডাক্তার সাহেব এশার নামাজে চলে গেলেন।
ডাক্তার সাহেব নামাজ শেষে আসার পর রোগীকে নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম একসাথে ১০ জন রোগী, চেম্বারের ভিতরে পা ফেলার জায়গা নাই,পুরুষ মহিলা কোন ব্যাপার না।রোগীর কোন প্রাইভেসী নেই।দুজন পুরুষ রোগী দেখার ফাঁকে ফাঁকে নাস্তা করলেন।
আমার ফুফুকে দেখা অবস্থা ইমোতে লাউড স্পিকারে ভিডিও কল রিসিভ করে নাতনীর সাথে খুঁনসুটি করলেন ২/৩ মিনিটের মত।তারপর আবার রোগী দেখা শুরু করলেন, গতানুগতিক ৫৫৩০ টাকার টেস্ট লিখে দিলেন।আর হ্যা নতুন রোগী ফি ১০০০ টাকা,পুরাতন ৫০০ টাকা।
চিকিৎসার ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই।কথা হল একজন ডাক্তার ৮২ জন রোগী দেখবেন সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত, তিনিও তো মানুষ।রোগী বেশী তাই পুরুষ মহিলা একসাথে ১০ জন করে দেখবেন, আবার রোগী রেখে নামাজ পড়ে আসলেন, দুনিয়া এবং আখেরাত শুধুই কি ডাক্তারদের জন্য?রোগীর প্রাইভেসি রক্ষা করা একজন ডাক্তারের নৈতিক দায়িত্ব নয় কি?
একরুমে ১০ জন করে রোগী আমার মনে হয়েছে কসাইয়ের দোকানে ক্রেতারা কেউ সিনা, কেউ রান কিনছেন।কসাইটা পাল্লায় কমে দিতে পারলে বাঁচে।
সকল পেশায় যেমন ভালো মন্দ লোক আছে, তেমনি চিকিৎসা পেশায়ও ভালো মন্দ আছে।আমাদের সমস্যা সকল ডাক্তারকেই কসাই বলি,কিন্তু সবাই কসাই নয় ফেরেশতাও রয়েছেন।
সকল চিকিৎসকের প্রতি অতল শ্রদ্ধা, ভাল থাকুন আপনারা, ভাল রাখুন আমাদের।
লেখকের ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া।