এগিয়ে যাচ্ছে নারী, তবে পিছু ছাড়ছে না কালোছায়া
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৯:৩৫,অপরাহ্ন ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ফারজানা মৃদুলা:
নারীর অগ্রযাত্রা বর্তমানে লক্ষণীয়, নারী অধীকার বা ক্ষমতায়ন ও এগিয়ে চলার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এখন রোল মডেল। সরকার নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে বহুমুখি পরিকল্পনা করেছে সরকার ,এর ধারাবাহিকতায় নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দুস্হ ও পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য ভিজেএফ,ভিজিডি,দুস্থ ভাতা,মাতৃত্বকালীন ভাতা,অক্ষম মা ও তালাকপ্রাপ্তদের জন্য ও রয়েছে ভাতার সুবিধা। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি,আমার বাড়ি আমার খামার। নারী স্বা্স্হসেবা নিশ্চিতকরনের জন্য কমি্উনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে।
এবার আসা যাক রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহন। এদিক দিয়ে ও বাংলাদেশ শীষ্ দেশগুলোর একটি,১৯৬৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহিলালীগ প্রতিষ্টার মাধ্যমে রাজনীতির মূলধারায় প্রবেশ করিয়ে নারী ক্ষমতায়নকে জোড়ালো করার যে প্রচেষ্টা শুরু করেছিলেন আজ তা উদিয়মান। যার জ্বলন্ত উদাহরহন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা। যার নিরলশ চেষ্টায় আজ নারীরা স্বনির্ভর হচ্ছে, সংসদের স্পিকার নারী থেকে শুরু করে,বিমান,নৌ,সেনা বাহিনী,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,প্রশাসন,বিজিএম্ই এর সভাপতি,নারী উদোক্তা,সাহিত্য চর্চা সর্বক্ষেত্রে নারীর জয়গান।
পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে তাই নারিীদের অবস্থান এর উন্নতি হতে যাচ্ছে।ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়ে নারীরা তাদের সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে গেছে।একদা ঘরের কোনে বন্দী নারীরা আজ আলোর দিশারী হয়ে আলোকিত করছে সমাজ তথা রাষ্ট। কিন্তু এতকিছুর পর ও আমরা নিরাপত্ত্হীনতায় ভূগি , ধর্ষন নামক অভিশাপ থেকে রক্ষা পাচ্ছি না শিশু, কিশোরী, তরুনি, বধু, বৃদ্ধা ।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেনদ্র (আসক) এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ১৪১৩ জন নারী ধর্ষনের শিকার হয়। ২০১৮ সালে এর সংখ্যা ছিল ৭০২ ,২০১৯ সালে যৌতুকের কারনে নিয্তনের শিকার হয় ১৬৭ জন নিহতের সংখ্যা ৯৬ জন প্রায়। গেলো বছরের দৃশ্যপটে একটু ঘুরে আসলে গা শিউরে ওঠার ঘটনা বেশকিছু,যার কাছে প্রতিনিয়ত ডুকরে কেঁদে মরে আমাদের মানবতা। ওয়ারীতে সেই ছোট্ট ৭ বছরের শিশু ধর্ষনের পর নির্মমভাবে হত্যা আমাদের বিবেকের কাছে লজ্জিত করে ধিক্কার দেয় এ সমাজকে,নুসরাতের মত প্রতিবাদী কন্ঠকে আগুনের দগ্ধ হয়ে নিঃশেষ হতে হয়।গণপরিবহনে নিরাপত্তা নেই তাই রুপার মত ঘটনা আমাদের চোখের সামনে আঙ্গুল দিয়ে বলে যায় এর নাম কি তবে তোমাদের সভ্য সমাজের নমুনা। কে নিবে এ দায়ভাড়?আপনি ,আমি,না সমাজ না রাস্ট্র? মানুষ গড়ার কারিগড় যে শিক্ষক তার কাছে ও ছাত্রীরা নিরাপদ থাকতে পারছে না।
দুঃখজনক হলেও সত্য আমরা এখনো স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসা,বিশ্ববিদ্যালয় নিযাতনমুক্ত করতে পারিনি, দিতে পারছিনা নিশ্চয়তা। একবিংশ শতাব্দিতে আমরা পর্দারপন করে পরিবর্তন এসেছে নারীর অবস্থা ও অবস্থানের যা কিনা দৃশ্যমান বটে, তবে আজ ও কেন আমরা নরপশুদের দমন করতে পারছিনা? কেনই বা নারীদের এতটা এগিয়ে চলা থমকে যায় এমন কিছু অনাকাঙ্খিত দৃশ্যপটের মুখোমুখি হয়ে।কবে শেষ হবে এ ধর্ষন নামক হলিখেলা? আসুন না ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে এক হয়ে দমন করি এ নরপশুদের। প্রানের প্রিয় এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এ বাংলাদেশ টাকে আবার নতুন করে জয় করি ধর্ষন নামক অভিশপ্ততা থেকে।
(সুরমানিউজ এর পাঠককলামে প্রকাশিত সব লেখা পাঠক কিংবা লেখকের নিজস্ব মতামত। এই সংক্রান্ত কোনো ধরনের দায় সুরমানিউজ বহন করবে না)