২২ শে শ্রাবণ স্মরণে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০১৯, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ
খায়রুল হাসান রুবেল:
১৫৮ বছর পরও আমাদের জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজও প্রাসঙ্গিক।শুধু প্রাসঙ্গিকই নয় কবিগুরু আমাদের সময়ের চেয়েও এগিয়ে। থাকবেনও হয়তো বহুকাল।কেননা পৃথিবীতে কিছু মানুষের জন্ম হয় যারা তাদের সময়কাল থেকেও বহুদূর পর্যন্ত ছাড়িয়ে যান।হয়ত তা মহাকাল পর্যন্ত।
আমাদের এই সংকট আর সংশয়ে ভরা জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বটবৃক্ষের ছায়ার মত।এটা নিছক অভিব্যক্তি নয় বরংঅনুভবে পরিপূর্ণ। প্রেমে, দ্রোহে,সংকটে,সংগ্রামে কোথায় নেই রবীন্দ্রনাথ।তাঁর গানে এবং সাহিত্য সম্ভার জীবনের সব কড়িকাঠ,চৌকাঠ, মেঝে আর মাদুরে ছুঁয়ে গেছে।
আমাদের এই বিষাদিত জীবনের প্রতিটি ধাপে মনের কথাগুলো গান,কবিতা,কিংবা ছোটগল্পে যিনি ঠিকঠাক বলে গেছেন তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আমাদের বয়সন্ধি কালে রবীন্দ্রনাথের ছুটি গল্পটা
পড়তাম আর অঝোরে কাঁদতাম।তখন হয়ত গল্পের সাথে ঐ সময়ের অনেক কিছু মিলে যেত
তাই চোখ দিয়ে আবেগের অশ্রু ঝরত।কিন্তু অনেক পরে গিয়ে বুঝেছি ফটিক চরিত্রে কিভাবে
তিনি ১৩/১৪ বছরের বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর মনের বলতে না পারা কথাগুলো তুলে ধরেছেন।
শ্বশুরবাড়ির নিপীড়ন আর নিষ্পেষণে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাওয়া হৈমন্তির কথাগুলো কিংবা হৈমন্তীর স্বামী অপুর হৈমন্তিকে নিজের মত করে না পাওয়ার বেদনার গল্পের মধ্যে দিয়ে তৎকালীন সমাজের চিত্রটা কত চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন রবিন্দ্রনাথ।
কাবুলিওয়ালার মিনি, ডাকঘরের রতনের জন্য
কাঁদেনি সাহিত্যে প্রেমি এমন বাঙালী হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
রবীন্দ্রনাথের গান আমাদের বর্ষাকে ভালবাসতে শিখিয়েছে,জীবনের দহন দিনে কেউ ডাক শুনে না আসলেও শুনলেও একলা চলার প্রেরণা যুগিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
স্মৃতির জনপদে আমিহীন ভুবনের ছবি আঁকি কবিগুরুর গানের ভাষায়।
।দেশ মা আর মাটিকে ভালবাসতে শিখিয়েছে রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথের গান আমাদের জাতীয় সংগীত এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার।অথচ আজকে এমন এক সময় ২২ শে শ্রাবন দরজায় কড়া নাড়ল যখন রবীন্দ্রনাথকে এদেশ থেকে নির্বাসনে পাঠানোর পায়তারা চলছে।তার গানকে জাতীয় সংগীত থেকে বাদ দেয়ার দাবী তোলা হচ্ছে। নিছক ধর্মীয় কারন আর পাওয়া না পাওয়ার খেদ থেকে। কিংবা সস্তা জনপ্রিয়তার আশায়।
এই মনোবৃত্তির লোকেরা আর যাই হোক নিজেদের বাঙালী দাবি করতে পারেনা।এরা একসময় ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পতিত হবেই।
রবীন্দ্রনাথ চীর সমুজ্জ্বল ছিলেন থাকবেন।২২ শে শ্রাবণ প্রয়াণ দিবসে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।