ইয়েমেন নয় তুরস্ক থেকে এসেছিলেন শাহজালাল
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৪৭:১৯,অপরাহ্ন ২৫ জুলাই ২০১৯
সাঈদ চৌধুরী টিপু:
তার নামের শেষে অনেকে ব্যবহার করেন ইয়েমেনি। হযরত শাহজালাল (রাহ.) ইয়েমেনি নামেই সমধিক পরিচিত তিনি। সিলেট বিজয়ী সাধকপুরুষ শাহজালালের (রাহ.) পরিচয়ের সাথে জুড়ে থাকা এ পরিচয় নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ আছে। শাহজালাল জীবনচরিত সুহায়েল-ই-য়্যামনি’র বর্ণনামতে, হযরত শাহজালাল (রাহ.) ১২৭১ সালে প্রাচীন আরবের হেজাজ ভূমির ইয়ামন প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে যেটি ইয়েমেন নামে পরিচিত। সেই ইয়েমেন থেকেই সিলেটে এসেছিলেন হযরত শাহজালাল (রাহ.)। তবে পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকরা দাবি করেছেন, ইয়েমেন নয় বরং তুরস্ক থেকে এসেছিলেন হযরত শাহজালাল (রাহ.)।
লেখক, গবেষক ও ঐতিহাসিক সৈয়দ মুর্তাজা আলী তার ‘হযরত শাহজালাল ও সিলেটের ইতিহাস গ্রন্থে’ দাবি করেছেন তুরস্কের কুনিয়া শহরে জন্ম হয়েছিল এই সূফি সাধকের। মার্কিন ঐতিহাসিক রিচার্ড এম ইটন তার ‘দি রাইজ অব ইসলাম অ্যান্ড দ্য বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার, ১২০৪-১৭৬০’ গ্রন্থেও একই দাবি করেছেন।
সৈয়দ মুর্তাজা আলী তার ‘হযরত শাহজালাল ও সিলেটের ইতিহাস গ্রন্থে’ উল্লেখ করেন, তার পুরো নাম শায়খুল মাশায়েখ মখদুম বিন মুহম্মদ। তার পিতা কোরায়েশ বংশীয় ও মাতা ছিলেন সৈয়দ বংশীয়। হযরত শাহজালালের ইয়েমেনি হওয়ার কোনো প্রমাণ পাননি সৈয়দ মুর্তাজা আলী। এক লাইনে তাই লিখেছেন, ‘এঁদের পূর্বপুরুষ সম্ভবত আরবের ইয়েমন প্রদেশ থেকে তুরস্কে আগমন করেন।
হযরত শাহজালাল (রাহ.) সম্পর্কে সবচেয়ে প্রাচীনতম উল্লেখ রয়েছে গুলজারে আবরার-এ। ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে লিখিত ফারসি এ গ্রন্থে লিখা রয়েছে, ‘ইনি তুর্কিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন। …ইনি সুলতান আহমদ ইয়েসবির খলিফা ছিলেন। গুলজারে আবরার-এ উল্লেখ রয়েছে, পীরের অনুমতি নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হযরত শাহজালাল (রাহ.)।
হযরত শাহজালাল (রাহ.) এসেছিলেন তুরস্কের কুনিয়া থেকে। জন্মভূমির নাম সাথে জুড়ে নিয়ে তার পরিচয় হযরত শাহজালাল কুনিয়াত (রাহ.)। প্রতিষ্ঠিত এ সত্যটিকে ছাপিয়ে তিনি কী করে ইয়েমেনি হয়ে গেলেন তার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভুল পরিচয়টাই বহুল ব্যবহারে যেনো সত্য হয়ে উঠেছে।
হযরত শাহজালালের (রাহ.) নামের সাথে জুড়ে আছে ‘মজররদ’ নামে আরো একটি শব্দ। এটিও তার নাম নয়। এটি একটি বিশেষণ যার অর্থ ‘চিরকুমার’। নাম ভেবে পরম ভক্তিভরে এ শব্দটি উচ্চারণ করেন আশেকানরা। সূত্র- একাত্তরের কথা