ওসমানীনগরে কুশিয়ারা ডাইকের পরিকল্পিত সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:২৩:৩৫,অপরাহ্ন ২৩ জুলাই ২০১৯
আনোয়ার হোসেন আনা:
সিলেটের ওসমানীনগরে পরিকল্পিত উন্নয়নের অভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ‘কুশিয়ারা ডাইক’র সুফল ভোগ করতে পারছেন না এলাকাবাসী। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেই বাঁধ ভেঙে অথবা নিচু বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েন উপজেলাবাসী। এতে একদিকে দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার কবলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে অন্যদিকে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় কৃষকসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে। এলাকাবাসীকে এই অনাকাংখিত দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষায় পরিকল্পিত ভাবে কুশিয়ারা ডাইকের প্রস্থ ও উচ্চতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে ওসমানীনগর উপজেলার কালনিরচর গ্রাম পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয় ২০০৪ সালে। পরবতীতে বিভিন্ন সময়ে বাঁধটি সংস্কারও করা হয়। ওসমানীনগরের শেরপুর মহাসড়ক থেকে কালনীরচর পর্যন্ত প্রায় ৯কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। বাঁধটি বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্মাণ করা হলেও ওসমানীনগরবাসী এর সুফল ভোগ করতে পারেনি আজও।
কুশিয়ারা নদীর পানি সর্বনি¤œ বিপদসীম ৮.০৫ মিটার। কিন্তু পানির লেভেল এই মাত্রা অতিক্রম করলেই নিচু বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে অথবা ভেঙে গিয়ে বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়ে উপজেলাবাসী। সর্বশেষ ২০১৭ সালে বাঁধটি ভেঙে গিয়ে বন্যাক্রান্ত হয়ে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েন ৮ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। ২০১৮ সালে ভাঙা স্থানসহ বাঁধের প্রায় দেড় কিলোমিটার ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়।
সম্প্রতি উজানের ঢল ও বিরামহীন বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ২৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করার মাত্রই সংস্কারের বাইরে থাকা বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নদীর পানি সর্বোচ্চ ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়ে এখনো দুর্ভোগে আছেন ৭ ইউনিয়নের প্রায় মানুষ। তবে প্রথম দিকেই ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় বাঁধের ওপর বালির বস্তা ফেলা হয়।
স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ বলেন, বন্যার হাত থেকে রক্ষায় কুশিয়ারা ডাইক নির্মাণ করা হলেও আমরা এর সুফল পাচ্ছিনা। এর সুফল পেতে হলে পুরো বাঁধটি সংস্কার করা জরুরী।
সাদীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব বলেন, বাঁধটি নিচু থাকায় এর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। সম্প্রতি বাঁধের ওপর দিয়ে পানি ঢুকে এলাকাবাসী বন্যা কবলিত অবস্থায় রয়েছে। বন্যার হাত থেকে রক্ষায় কুশিয়ারা ডাইক বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, ওসমানীনগরবাসীকে বন্যার হাত থেকে রক্ষায় কুশিয়ারা ডাইকের উচ্চতা ও প্রস্থ বৃদ্ধির মাধ্যমে সংস্কার করা জরুরী। তা না করলে এলাকাবাসী প্রতিবছর বন্যাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, বাঁধের উচ্চতা বন্যা নিয়ন্ত্রণের উপযোগী নয়। বাঁধটির উচ্চতা ১মিটার বৃদ্ধি এবং প্রস্থ ৬মিটার করার জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ হয়েছে। তা অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে।