সর্বগ্রাসী মনুর পানি বিপদসীমার নিচে, শঙ্কামুক্ত মৌলভীবাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ জুলাই ২০১৯, ১২:২১ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
মনুর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে শুনলেই বন্যার আতঙ্কে দিকভ্রান্ত হয়ে যান স্থানীরা। সেই সর্বগ্রাসী মনু এবারও চোখ রাঙিয়ে যাচ্ছে। তবে পানির বিপদসীমা অতিক্রম করলেও শান্ত হয়ে যাচ্ছে মনু। এরই মধ্যে মনুর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে এসেছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যার প্রতিবেদনে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায় মনু পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও ধলাইর পানি বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে বন্যার শঙ্কা কেটেছে মনু পাড়ের বাসিন্দাদের।
এরআগে শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে কমলগঞ্জের ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পৌল এলাকায় রামপাশায় বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারায় বাঁধ খোলা থাকায় সেদিকে পানি ঢুকে আশপাশ প্লাবিত করে। রহিমপুর ইউনিয়নে বাঁধ উপচে দু’টি গ্রাম প্লাবিত করে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে ধলাইর পানি কমতে শুরু করলে সে পানি নেমে যায়।
মনুর পানি বাড়ার করণে প্রতিরক্ষা বাঁধের ভেতরের বাসিন্দাদের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। মৌলভীবাজার শহরের সৈয়ারপুর, গোজারাই এলাকায় কয়েক শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে রাত ৮টা পর্যন্ত জানা যায়, মনুর পানি কমলে কুলাউড়ার কটারকোনা এলাকায় বাঁধের একাংশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী সেখানে উপস্থিত থেকে বাঁধকে টেকসই করার কাজ করাচ্ছেন। যেসব এলাকার বাঁধ নূন্যতম ঝুঁকিতে আছে সেসব এলাকায় সমানভাবে তৎপরতা রেখেছে পাউবো। যার ফলে মনুর সর্বনাশী আতঙ্ক কমে আসছে।
অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, পানিতে ডুবে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৮ হেক্টর ও কমলগঞ্জ উপজেলায় ১২৫ হেক্টর আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবছর মৌলভীবাজার জেলায় ৫৩ হাজার ১০ হেক্টর আউশ ধান চাষ করা হয়েছে। পানি না কমলে আরও বেশি পরিমাণ ধানের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন অধিদফতরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লৎফুল বারী।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ধলাইর পানি বিপদসীমার নিচে নামায় প্লাবিত এলাকা থেকে প্রায় পানি নেমে গেছে। সব এলাকার সার্বিক খোঁজ নিয়ে ত্রাণ পৌঁছানো হয়েছে। টানা বর্ষণে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা রয়েছে, তাদের সহায়তা দুই টন চাল ও শুকনো খাবার রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ধলাইর যেখানে বাঁধ ভেঙেছে তার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। পানি নামলেই কাজ শুরু হবে। মনুর সব বাঁধ ঠিক আছে। সর্বশেষ কটারকোনায় একটু সমস্যা হয়েছিল সেখানে কাজ চলছে।
অন্যান্য বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি পাউবোর আছে বলে জানান তিনি।