পানি ঢুকেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টে
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৯, ৯:২১ অপরাহ্ণ
ছনি চৌধুরী, হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি কমতে শুরু করলে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, শনিবার(১৩জুলাই) রাত ৮টায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলে বাঁধ উপচে নবীগঞ্জের ১০০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। অল্প অল্প করে পাওয়ার প্ল্যান্টে ভেতরে পানি প্রবেশ করায় অনেক যন্ত্রাংশ পানিতে ডুবে যাচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোন ধরণের ব্যাঘাত ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করেছেন পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্মকর্তাদের।
অন্যদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় বাঁধসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়সহ অনেক গ্রামে প্রবেশ করছে পানি। দীঘলবাকের কসবায় বাজু সুনাইত্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। পানিবন্দি হয়ে আতংক উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পানির নিচে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাচা-পাকা সড়ক। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ঝুঁকিপূর্ণ কুশিয়ারা ডাইকের ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছে।
শনিবার দিনব্যাপী নবীগঞ্জের পারকুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কুশিয়ারা ডাইকে মেরামতের কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ডাইকের ভাঙন রোধে কুশিয়ারা ডাইকে বস্তা ফেলা হয়েছে।
প্রচ- বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক, কসবা,মাধবপুর,গালিমপুর, কুমারকাঁদা, ফাদুল্লা,রাধাপুর, জামারগাঁওসহ বেশকিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। বাড়ি-ঘরে পানি উঠায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকেই। যে কোনো মুহূর্তে ওই ডাইক ভেঙে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন ।
বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টের (বিপিডিবি) ইঞ্জিনিয়ার সজল বলেন, ‘পাওয়ার প্ল্যান্টের ভেতরে একটু একটু করে পানি প্রবেশ করছে। এতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশে পানি ডুকছে। তবে মূল উৎপাদন কেন্দ্রে পানি উঠার সম্ভাবনা নেই। কারণ মূল উৎপাদন কেন্দ্রটি পাওয়ার প্লান্টের ভূমি থেকে অনেক উপরে।’তিনি বলেন- ‘মূল উৎপাদন কেন্দ্রটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সমতল। সুতরাং মহাসড়ক ডুবলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হবে। অন্যতায় সাময়িক সমস্যা হবে।
হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, রাত ৮টায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ কুশিয়ারা ডাইকের ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছে। সময় যত যাচ্ছে পানি বাড়ছে।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে,আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। আশা করছি বৃষ্টি থামলে পানি কমে আসবে।