এবার সিলেটের পালকি রেস্টুরেন্টে বাসি খাবার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০১৯, ৩:৪৯ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক :
সিলেটে আলপাইন রেস্টুরেন্টের খাবার পানিতে কেঁচো পাওয়ার পর এবার বাসি খাবার পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে নগরীর সহির প্লাজার পূর্ব জিন্দাবাজারের পালকি রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে। প্রতিদিনের মতো সিলেটের একজন সিনিয়র সাংবাদিক শনিবার সকালে নাস্তা করতে পালকি রেস্টুরেন্টে যান। কিন্তু আজ খাবার পরিবেশনে ঘটলো অন্যরকম ঘটনা। পালকি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এর আগেও নগরীর দক্ষিণ সুরমার আব্দুর রহমান নামক একজন ভোজন বিলাসী এই রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে বাসি খাবার পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। বিষয়টি তিনিও রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন। তাতেও টনক নড়েনি পালকি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের!
জানা গেছে, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সহ সভাপতি ও দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার প্রধান আলোকচিত্রী শাহ্ মো. কয়েছ আহমদ প্রতিদিনের মতো পালকি রেস্টুরেন্টে নাস্তা করার জন্য যান। রেস্টুরেন্টের একজন বয়কে খাসির পায়া’র জন্য অর্ডার করেন। যথারিতি বয় খাসির পায়া নিয়ে আসে। খাবার মুখে দেবার পর পচাঁ গন্ধ পান সাংবাদিক কয়েছ। তিনি বিষয়টি রেস্টুরেন্ট বয় এবং রেস্টুরেন্ট ম্যানেজারকে বলেন। ঘটনার সময় তিনি শারিরীক অসুস্থতাবোধ করেন। সেই সময় অন্য একজন রেস্টুরেন্ট বয় এসে বলে, মামাকে বাসি খাবার দিলে কেনো? পরে সাংবাদিক কয়েছ পুরো নাস্তা না করে পালকি রেস্টুরেন্ট থেকে চলে যান।
এদিকে সাংবাদিক কয়েছ বিষয়টি তিনি তার মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। পরে তিনি তার ফেসবুক আইডিতে ঘটনাটি পোস্ট করেন। পালকি রেস্টুরেন্টের এমন কান্ডে ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। অনেকেই অভিযাত এই রেস্টুরেন্টকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করছেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন পালকি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার (মোবাইল নং-০১৭৮৫-৯৯××০০)। তবে তিনি তার নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে একই নাম্বারে আবির নামে একজনের সাথে নিউজ মিরর’র আলাপ হলে তিনি বিষয়টি অবগত নন বলে জানান।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পূর্ব জিন্দাবাজারের অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ বলেন, এরকম ঘটনা অহরহ ঘটে এই পালকি রেস্টুরেন্টে। আমরা দেখে দেখে অব্যস্থ হয়ে পরেছি। পঁচা খাবারের কারণে গত ক’দিন আগেও একটি ঝামেলা হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালতও অভিযান পরিচালনা করেছে।
শনিবার দুপুরে পালকি রেস্টুরেন্টের গিয়ে দেখা যায়, অপরিচ্ছন্ন রান্না ঘরে চলছে রান্নার কাজ। ময়লা পানি দিয়ে চলছে প্লেইট গ্লাস ধোয়ার কাজ। জুস কর্ণারে ফলমূলে ময়লা। পার্কংয়ে পাশে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং মলমূত্রের গন্ধ। একই জায়গায় জুসের গ্লাসে যে বরফ দেয়া হয় তা এখানেই ভাঙ্গা হয়। বৃষ্টির পানি বরফের বক্সে ঢুকছে। বাতরুমের প্রসাবের পানি পুরো পার্কিংয়ে ছড়িয়ে আছে। ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিন একই জায়গায়।
বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সহ সভাপতি ও দৈনিক সবুজ সিলেট পত্রিকার প্রধান আলোকচিত্রী শাহ্ মো. কয়েছ আহমদ বলেন, আমি বাড়ি থেকে রের হয়ে প্রতিদিনের মতো পালকি রেস্টুরেন্টে নাস্তা করার জন্য যাই। রেস্টুরেন্টের একজন বয়কে খাসির পায়া’র জন্য অর্ডার করি। আমাকে বয় খাসির পায়া দেয়। খাবার মুখে দেবার পর আমি পচাঁ গন্ধ পাই। কিছুটা খেয়েও ফেলি। বাসী খাবারের বিষয়টি রেস্টুরেন্ট বয় এবং রেস্টুরেন্ট ম্যানেজারকে অবগত করি। সেই সময় আমি শারিরীক অসুস্থতাবোধ করি। পেটে ব্যাথা অনুভব করি। রেস্টুরেন্ট একজন বয় এসে বলে, মামাকে বাসি খাবার দিলে কেনো? এখানেই কী শেষ! পালকি কর্তৃপক্ষ এনিয়ে তাদের বার্বুচিকে কিছুই বলেনি। পরে আমি আমার বিল দিয়ে নাস্তা না করে পালকি রেস্টুরেন্ট থেকে চলে অফিসে চলে আসি।
বিষয়টি সিলেটের সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়’কে জানালে তিনি বলেন, অসাস্থ্যকর খাবার কারণে সাস্থ্যের ক্ষতি যেমন তেমনি মৃত্যুও হতে পারে। কারো সাস্থ্য নিয়ে এরকম করা কোনো রেস্টুরেন্টেরই ক্ষেত্রে ঠিক না। সূত্র- নিউজ মিরর।