লাউয়াছড়ায় বন্যপ্রাণী গবেষণার নামে আন্তর্জাতিক চোরাচালান প্রতিহত করার দাবিতে মানববন্ধন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০১৯, ৬:০৪ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
কোন প্রকার সরকারি অনুমতি না নিয়ে সম্প্রতি দেশী কতিপয় গবেষকের সাথে কিছু বিদেশী পর্যটক মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করে বন্যপ্রানী ও জীব বৈচিত্র নিয়ে গবেষনা করেছেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সরগরম রয়েছে। এসব গবেষকরা আবার এ উদ্যান থেকে সাপের ডিম সংগ্রহসহ বন্যপ্রানী পাচার করেন বলেও স্থানীয়ভাবে জোর অভিযোগ উঠেছে। বন্যপ্রাণী গবেষণার নামে আন্তর্জাতিক চোরাচালান প্রতিহত করার দাবিতে সংক্ষুদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, সিলেট এর আয়োজনে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিরুপ আবওহাওয়া উপেক্ষা করেও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান প্রবেশ পথ এলাকায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) সিলেট বিভাগীয় সম্পাদক আব্দুল করিমের নেতৃত্বে স্থানীয় জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করেন। এক ঘন্টা স্থায়ী মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাপা সিলেটের সভাপতি আব্দুল করিম, পরিবেশ সংগঠক নিয়ামুল ইসলাম খান, বাপা সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামির মাহমুদ চৌধুরী, শামছুল হক, ব্যারিষ্টার গোলাম সোবহান চৌধুরী, বাপা হবিগঞ্জ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্ঝল হোসেন, বাপা মৌলভীবাজারের সমন্বয়কারী আসম সালেহ সোহেল, মৌলভীবাজার পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোহাইমিন মিল্টন, কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমদ আজাদ মান্না, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আহাদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে বিপন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী পাচার করছে সংঘবদ্ধ একটি পাচারকারী দল, যাদেরকে চিহ্নিত করা কঠিন। এই অবস্থায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করে গবেষণার নামে যথাযথ অনুমোদন ছাড়া দেশি-বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এদের মধ্যে বন্যপ্রাণী নিয়ে ইতোপ‚র্বে আটক হওয়া জনৈক প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা উদ্বেগের, যা সিলেট বিভাগের প্রকৃতি ও পরিবেশপ্রেমী নাগরিকদের সংক্ষুব্ধ করেছে। এ অবস্থায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জীববৈচিত্র্যকে বিপন্ন করে বন আইনে অভিযুক্ত দেশি-বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা হওয়া উচিত।
বক্তারা আরো বলেন, সম্প্রতি দেশীয় সাপের গবেষক শাহরিযার সিজারের সাথে দুইজন মার্কিন গবেষক পর্যটক হিসেবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করেছিলেন। দুই বেদশী পর্যটক দেশী গবেষকের সাথে মিলে অবৈধভাবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে নানা জাতের সাপের ডিম সংগ্রহ করেন। অথচ গবেষনার কাজে আসতে হলে বিদেশীদের প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমতি নিতে হয়। তারা সরকারি অনুমতির তোয়াক্কা না করেই অবাদে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঘুরে এ বনের জীব বৈচিত্র্য সংগ্রহ করেছেন। নিশ্চয় তারা বন্যপ্রানী পাচারের সাথেও জড়িত রয়েছেন। তাই শাহরিয়ার সিজারসহ বিদেশী পর্যটকরুপী গবেষকদের এ ধরনের কাজের তদন্ত পূর্ব দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। তাদের এ ধরনের কাজে লাউয়াছড়া বনের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। বক্তারা আরও বলেন, এ বনের বন্য প্রানী রক্ষায় সরকার যেহেতু বিকল্প সড়ক পথ চালুর চিন্তা ভাবনা করছে সেহেতু এ বনের ভিতরে চলমান রেল পথটিও সারানো উচিত।