সিলেট বিএনপির নতুন কমিটি চলতি মাসে
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০১৯, ৪:২৬ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটি ভেঙে চলতি মাসেই গঠন করা হচ্ছে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সারাদেশে দল পুর্নগঠন শুরু করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশেই সিলেট জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল সিলেট জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘স্কাইপে’ বৈঠকে মিলিত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে দলকে সংগঠিত করার জন্য সকল মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তারেক রহমান। কার্যনিবাহী বৈঠক করে ১৫ মে’র মধ্যে কর্মপরিকল্পনা দেয়া নির্দেশনাও দেন তিনি। পরে ৫ মে জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা থেকে জেলা বিএনপির কমিটিও পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তারেক রহমানের কাছে দল পুনর্গঠন কার্যক্রমের বিস্তারিত রুপরেখাও পাঠানো হয়।
এরপর তারেক রহমানের নির্দেশে সিলেট জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি বৈঠক গত সোমবার (৮ জুলাই) নগরের সোবহানীঘাটস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্টিত হয়। বৈঠকে জানানো হয়, জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির এটাই শেষ কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক।
বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, চলতি মাসেই জেলা জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি মেয়াদ হবে ৩ মাস। আহ্বায়ক কমিটি উপজেলা পর্যায়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করবে। উপজেলা কমিটি আবার ইউনিয়নে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করবেন। তারা ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি করবেন। এরপর সরাসরি প্রত্যক্ষ ভোটের সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হবে। তবে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটির যারা আহ্বায়ক হবেন তারা একই কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ‘ডাউস’ কমিটি না করে গঠণতন্ত্র মোতাবেকই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। জেলা বিএনপির কমিটি করা হবে হবে ১৫১ সদস্যের। আহবায়ক কমিটি ৩ মাসের মধ্যে তাদের দায়িত্ব পালন না করলে সেই কমিটিও ভেঙে দেয়া হবে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে বর্তমান কমিটির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীমই আহ্বায়ক হচ্ছেন। তার সঙ্গে যুগ্ম আহ্বায়ক হতে পারেন আরও ৬ থেকে ৮ জন। কমিটিতে মোট সদস্য সংখ্যা ৩১ বা ৫১ হতে পারে।
২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে আবুল কাহের চৌধরিী শামীম সভাপতি, আলী আহমদ সাধারণ সম্পাদক ও এমরান আহমদ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল গঠন করা হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। কমিটি গঠনে লঙ্ঘন করা হয় গঠনতন্ত্র। ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি হওয়ার নিয়ম থাকলেও করা হয় ২৮৫ সদস্যের। কমিটিতে ১৫ জন সহ-সভাপতি থাকার কথা থাকলেও রাখা হয় ৩৪ জন। কমিটিতে ৫ জন যুগ্ম সম্পাদকের জায়গায় ৮ জন ও ৩ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের জায়গায় ৫ জনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, সম্ভাব্য বিদ্রোহ ঠেকাতে অতিমূল্যায়ন করে সবাইকে খুশি রাখা হয় সেই কমিটিতে।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, ‘দল পুর্নগঠনের অংশ হিসেবে সিলেট জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে যে কোনও সময় আহ্বায়ক কমিটি করা হবে। তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। এখন থেকে যে সব কমিটি হবে সেগুলোর আকার হবে ছোট। নতুন সকল কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন বলেন, ‘সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি হচ্ছে শিগগিরই। কমিটির আকার ছোট হবে। ৩১ বা ৫১ জনের হতে পারে। এই কমিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বিএনপিকে ঢেলে সাজাবে। সকল কমিটি হবে নির্বাচনের মাধ্যমে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সারাদেশেই দলকে পুর্নগঠন করা হচ্ছে। সিলেটেও শিগগিরই নতুন কমিটি হবে। তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ীই দলকে ঢেলে সাজানো হবে।’