পুলিশে চাকরি: হবিগঞ্জে মায়ের পরিশ্রমে সফল দুই বোন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০১৯, ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ:
সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তবু থেমে থাকেনি স্বপ্ন পূরণের অদম্য ইচ্ছা। ঝিয়ের কাজ করে দুই মেয়েকে লেখাপড়া করান মা। মায়ের সেই পরিশ্রমের ফলে দুই মেয়ে আজ পুলিশ কনস্টেবল।
রোববার সন্ধ্যায় তাদের নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- জেলার আজমিরীগঞ্জের পশ্চিমভাগ গ্রামের দূর্গাচরণ দেবের মেয়ে রোমা রানী দেব ও রুনা রানী দেব। তারা বানিয়াচং সুফিয়া মতিন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী।
এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, রোমা রানী দেব ও রুনা রানী দেব হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য। তাদের বাবা নেই। তাদের মা বাসন্তী রানী দেব বাসায় কাজ করে মেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশ পুলিশের সদস্য হয়েছেন। মায়ের পরিশ্রমের ফল মিলেছে। জনগণের সেবায় দুই বোন নিজেদের নিয়োজিত রাখবে বলে আশাবাদী।
মা বাসন্তী রানী দেব জানান, পুলিশ বিভাগকে প্রথমে ধন্যবাদ জানাই। যারা বিনা টাকায় মেয়েদের চাকরি দিয়েছে। মানুষের বাসায় কাজ করে মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। তারা এক সঙ্গে চাকরি পেয়েছে। এর চেয়ে খুশির খবর কি হতে পারে।
রোমা রানী দেব জানান, বাবার মৃত্যুর পর মা অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। কখনো ভাবিনি বিনা টাকায় চাকরি পাবো। কিন্তু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে দুই বোন চাকরি পেয়েছি। জনগণের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখতে চাই।
এর আগে মাত্র ১০০ টাকা খরচ করে পুলিশের চাকরি পান ৯৭ মেধাবী শিক্ষার্থী। রোববার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ পুলিশ লাইন মাঠে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এ সময় ব্রিফিংয়ে হবিগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, সাধারণ কোটায় পুরুষ ২০ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুরুষ ২৯ জন, অন্যান্য কোটায় ৯ জন, সাধারণ কোটায় নারী ৩৪ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নারী চারজন, অন্যান্য কোটায় একজনসহ মোট ৯৭ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এসপি আরো বলেন, কোনো দালাল বা টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হয়নি। নিয়োগপ্রাপ্তরা অত্যন্ত হতদরিদ্র ও মেধাবী। এদের মধ্যে কারো বাবা কৃষক, আইসক্রীম বিক্রেতা, অন্ধ। আবার অনেক প্রার্থী টিউশনির মাধ্যমে উপার্জন করতেন। এরা অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকলেও মেধায় অনেক এগিয়ে। তাই তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। যারা চাকরি পেয়েছেন, তারা মাত্র ১০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফ করেছেন। এতেই তারা সফলতা অর্জন করেছেন।