মেডিকেল সেন্টার জটিলতা: কবে খুলছে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার?
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুলাই ২০১৯, ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
প্রবাস ডেস্ক :
কবে থেকে আবারো কর্মী যাওয়া শুরু হবে মালয়েশিয়ায়? জনশক্তি খাতের সাথে যুক্ত এবং মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের কাছে বড় প্রশ্ন এটি। কিন্তু বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয় থেকে এবিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। গেলো এক মাসে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে নতুন কোন বার্তা দেয়া হয়নি ।
এর আগে গেলো ৩১ মে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ১ লা জুলাই থেকে কর্মী পুন:স্থাপন করতে পারবে কোম্পানীগুলো। কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় হবে সেটা পরিস্কার করা হয়নি।
মালয়েশিয়া সরকার ২০১৭ সালে স্থগিত করা সিস্টেমটির পুন:স্থাপনের অনুমোদন দেয় দেশটির মন্ত্রিসভা । মালয়েশিয়া সরকার বিশ্বাস করে যে এই পদ্ধতিতে মালয়েশিয়াতে বিদেশী কর্মীদের সংখ্যা বাড়ানো হবে না বরং নিয়োগকারীদের জন্য তার কোম্পানিতে কর্মীদের আগের (অনুমোদিত কোটা) সংখ্যাটি বজায় থাকবে।
বলা হয়েছে, একটি কোম্পানিতে সরকার অনুমোদিত ১০০ জন বিদেশি কর্মীর মধ্যে ২০ জন কর্মী দেশে চলে গেছেন বা অন্যত্র গেছেন। ঐ কোম্পানি চাইলে ইতিমধ্যে চলে যাওয়া ২০ জন কর্মীর স্থানে ২০ জন কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে, সেক্ষেত্রে নতুন করে মন্ত্রণালয়ে কোটার আবেদন করতে হবে না।
মালয়েশিয়াতে শ্রমবাজারের সাথে সম্পৃক্ত একজন ব্যবসায়ি বলেন, ১ জুলাই থেকে কর্মী পুন:স্থাপন প্রক্রিয়া চালুর কথা থাকলেও তা বিলম্ব হতে পারে। তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় সরকার জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এবিষয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। তখনই বিষয়টি চুড়ান্ত হবে। তারপরই মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার মেডিকেল কবে থেকে, তা চুড়ান্ত হবে।
এদিকে বাংলাদেশে কর্মীদের মেডিকেল করার সেন্টার নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা । প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে জিটুজি প্লাস পদ্ধতির বিলুপ্ত সিন্ডিকেটের শীর্ষ এক ব্যবসায়ী মেডিকেল সেন্টার দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ঐ ব্যবসায়ি চাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয় থেকে মেডিকেল সেন্টারের অনুমোদন দেওয়াতে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করাতে তত্পরতা চালাচ্ছেন তিনি। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, কর্মকর্তারাদের অনেকেই মনে করছেন এখান থেকে মেডিকেল তালিকাভুক্তি হলে মালয়েশিয়া যদি সেটা অনুমোদন না দেয়, তখন সমস্যা হবে। কারণ মালয়েশিয়া সরকার এর আগেই বাংলাদেশের জন্য ১৬ টি মেডিকেল সেন্টার অনুমোদন দিয়েছে, যা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তাদের অনলাইন সিস্টেমেও যুক্ত আছে। নতুন করে মেডিকেল সেন্টার তালিকাভুক্তি হলে সেটা মালয়েশিয়া সরকারের সিস্টেমে যুক্ত করতে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান এ প্রতিবেদককে বলেন, মেডিকেল সেন্টার নিয়োগের বিষয়ে একটা নীতিমালা রয়েছে। সেই আলোকেই সেন্টার তালিকাভুক্ত করা হবে। মালয়েশিয়া সরকারের পদ্ধতিতে কিভাবে যুক্ত হবে- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, সেবিষয়ে তারা সমন্বয়ের জন্য কাজ করছেন। মালয়েশিয়া শ্রমবাজার বিষয়ে মন্ত্রণালয় সতর্কতা এবং দ্রুততার সাথে কাজ করছে বলেও জানান রৌনক জাহান।
মেডিকেল সেন্টারের এই জটিলতা দীর্ঘস্থায়ী হলে শ্রমবাজার খোলার বিষয়টি আবারও ঝুলে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি সকলের জন্য যেনো উন্মুক্ত থাকে সেবিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কাজ করার আহবান জানান এখাতের সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সকলের জন্য উন্মুক্ত হওয়া শ্রমবাজারটি মেডিকেল সেন্টার ইস্যুতে যেনো আবারও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এদিকে যেসকল কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কারো সাথে এ বিষয়ে লেনদেন না করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ভিসা চালু হলেও, কলিং পেপার, চুক্তিপত্র, অভিবাসন ব্যয়, কাজের ধরণ সব দেখে যাচাইবাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।