ফেঞ্চুগঞ্জের রাস্তায় যুবকের রক্তাক্ত লাশ : ধুম্রজাল সৃষ্টি, আটক ৬
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০১৯, ৪:১৪ অপরাহ্ণ
সুরমা নিউজ :
ফেঞ্চুগঞ্জে রাস্তায় পড়ে থাকা উতু মিয়া (৩৫) নামের এক দিনমুজুরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (০১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার ঘিলাছড়া ইউনিয়নের যুদিষ্টিপুর গ্রামের নয়াগাঁও এলাকায় সড়ক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সন্দেহজনক ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
তবে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে উতুর দেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকায় এটি হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু এ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
নিহত উতু মিয়া যুধিষ্টিপুর (পশ্চিমটিলা) গ্রামের মৃত মফজ্জিল আলীর ছেলে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
আটককৃতরা হলেন- আলকাছ আলী (৭০), তাঁর ছেলে বাবলু মিয়া (৩০), সাবলু মিয়া (২৫), শিপলু মিয়া (১৯), পাপ্পু আহমেদ (১৬) ও হোসেন আহমেদ (১৩)।
স্থানীয়রা জানান, এদিন সন্ধ্যার পর মখজ্জিল আলীর মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষনিক তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে খবর দেন। ততক্ষণে উৎসুক জনতাও চারদিক থেকে ভীড় জমাতে থাকেন।
নিহত উতু মিয়ার বড় ভাই অটোরিস্কা চালক মুক্তার আলী (৪০) জানান, উতু দিনমুজুরের কাজ করত। স্ত্রী থাকেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদিআরবে। তাদের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। তাঁরা থাকে নানাবাড়ী। উতু ৩ দিন বাড়ীতে ছিলনা (১ জুলাই) সোমবার বাড়ীতে এসেছে। বিকেলে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিকটস্থ ঘিলাছড়া পরগনাবাজরের মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করে উতু।
মুক্তার আলী আরো জানান, তিনি জেনেছেন- আসরের নামাজের পর বাজারের একজন ব্যবসায়ী উতুকে মনগাছের ডাল কাঁটতে পাঠিয়েছিলেন। এখানে উল্লেখ্য যে, জনৈক এই ব্যবসায়ী উতুকে খুব স্নেহ করতেন। উতু বাজারের এক কাঠের আসবাবপত্রের কারখানা থেকে একটি বাটাল নিয়ে মনগাছের ডাল কাঁটতে যায় ঘিলাছড়া এলাকায়।
দিনমুজুর উতু মিয়া মনগাছের ডাল ঠিকই কেটেছিলেন, কিন্তু বাজারের জনৈক ব্যবসায়ীর দোকানে আর ফেরা হলোনা তাঁর। বাটাল হতে উতু মিয়ার নিথর দেহ পড়ে থাকে নিজ ঘিলাছড়ার আহকাম মিয়ার বাড়ীর সামনের রাস্তায়। মাতায় টুপি, পরনে খয়েরী রংয়ের টি-শার্ট, নীল টাউজার ও পায়ে রাবারের কালো সেন্ডেল। তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, স্থানীয় পথচারিরা লাশ দেখতে পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ থানা ও বড় ভাই মুক্তার আলীকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান, ওসি (তদন্ত) খালেদ চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।
ঘিলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী বলেন, লোকটির নাকমুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। তার মাথার কাছে হাতে কাঠমিস্ত্রি কাজে ব্যবহৃত বাটাইল পাওয়া যায়। তবে মৃত্যু স্বভাবিক না অস্বাভাবিক তা বলা যাচ্ছে না। ঘটনাটি তিনি তাৎক্ষনিক থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন।
ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে নিহত উতু মিয়ার দেহে আঘাতের কোন চিহ্ন না থাকায় এটি হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু ময়না তদন্তে ছাড়া বলা যাবেনা। তবে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের প্রতি নিহতের পরিবারেরও সন্দেহ রয়েছে। লাশ থানায় রাখা হয়েছে, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশ পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।