সিলেটের ১৫ দালাল ও ২৩টি ভুয়া ট্রাভেলসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুলাই ২০১৯, ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ
সুরমা নিউজ ডেস্ক:
সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে ৩৭ জন বাংলাদেশি মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত পাচারকারী, ট্রাভেল এজেন্সি, দালালচক্র ও সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।জনস্বার্থে করা এক রিটের আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
সংশ্লিস্ট বেঞ্চের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানিয়েছেন, এর আগে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিলেন এ ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমরা আদালতকে বলেছি, এ ঘটনার তদন্তে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
কমিটিতে আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এই তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয় বিধায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার সিন্ডিকেট চিহ্নিত করতে তদন্ত চলমান রেখেছেন।
পরে শুনানি গ্রহণ শেষে হাইকোর্ট ২৩টি ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সি, সিলেটের ১৫টি দালাল চক্র ও নোয়াখালী অঞ্চলের তিনটি সিন্ডিকেটের ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
বিদেশে পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে আদালত সবাইকে সচেতন হতে বলেছেন উল্লেখ করে এই আইন কর্মকর্তা জানান, অনেকেই এভাবে অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়ায় নি:স্ব হয়ে যাচ্ছেন। অনেকে মারা যাচ্ছেন। অনেককে বিদেশের মাটিতে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এতে করে বিদেশের মাটিতে দেশেরও ভাবর্মূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে মানুষ যেন আরও সচেতন হয়।
এর আগে ১৬ জুন ওই ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং ওই ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ এমদাদুল হক সুমন।
সোমবার রিট আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। শুনানি নিয়ে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আদালত বাদ দিয়ে রুল জারি করেছেন।
৯ মে ভূমধ্যসাগরে তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ওই ৩৭ বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়। গণমাধ্যমের খবর অনুসারে ৯ মে গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় চড়ে ইতালির উদ্দেশে রওয়ানা হয়। গভীর সাগরে বড় নৌকাটি থেকে অপোকৃত ছোটো একটি নৌকায় তাদের তোলা হলে কিছুণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়। এতে যে ৩৭ জন বাংলাদেশী মারা যান তাদের অধিকাংশেরই বাড়ি সিলেট ও নোয়াখালী অঞ্চলের বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় ২৩টি ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সি, সিলেটের ১৫টি দালাল চক্র ও নোয়াখালী অঞ্চলের তিনটি সিন্ডিকেট জড়িত বলে পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরে পত্রিকার প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করেন ওই আইনজীবী।