সুনামগঞ্জে বাড়ছে পানি, বন্যার আশঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুন ২০১৯, ৫:৩৭ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা :
গত তিনদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাত আর ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সুরমা নদীর পানি বাড়ায় হাওর অঞ্চলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের জন্য জনর্দুভোগ বেড়েছে। শহরের কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে সুনামঞ্জের শেষ সীমান্তে ভারতের মেঘালয় রাজ্য হওয়ার কারণে পাহাড়ি ঢলেও দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।
আজ শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সুনামগঞ্জে গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪১৫ মিলিমিটার। আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বৃষ্টিপাত আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি গড়ে ৮ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে।
শহরের সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত কিছু এলাকার সড়কে পানি উঠলেও মূল শহরে এখনও পানি প্রবেশ করতে পারেনি। তবে বৃষ্টির পরিমাণ অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় শহরে পানি ঢুকে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। শহরের আরপিন নগর, নতুন পাড়া, ওয়েজখালীসহ কয়েকটি নিচু এলাকার সড়কে পানি উঠেছে। এছাড়া জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলা, লক্ষীপুর, সদর ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সেখানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুকুরের মাছের। প্লাবিত হয়ে অনেক পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে। একই সঙ্গে জেলার বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরে কয়েকটি গ্রাম হাওরের পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরের উত্তর আরপিন নগরের বাসিন্দা মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘যে পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে, এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নিশ্চিত বন্যা হয়ে যাবে। এখনই তো দেখতে পাচ্ছেন সড়কে পানি উঠে গেছে। বৃষ্টি থামলে আশা করি পানি বাড়বে না। বন্যা হলে তো সকল মানুষের অসুবিধা।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, ‘পানি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে যেকোনো সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহরে পানি প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।’
দোয়ারাবাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোনিয়া সুলতানা বলেন, ‘এ উপজেলায় কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানে মানুষদের শুকনা খাবার দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে সেখানে যেকোনো প্রকার অভিযোগ দিতে পারবেন এলাকার বাসিন্দারা। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’