সিলেটে দিনভর পরিবহন শ্রমিকদের তান্ডব : চরম ভোগান্তি, জিম্মি যাত্রীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ৭:৫৫ অপরাহ্ণ
মো. নিজামুল হক লিটন :
সিলেটে সোমবার কর্মবিরতির নামে সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘট পালন করে পরিবহন শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকরা সিলেটের বিভিন্ন সড়কে তাদের তান্ডব লীলা চালায়। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) শিক্ষার্থী ওয়াসিম আব্বাসকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চালক ও তার সহকারীকে রক্ষায় তাদের এই কর্মসূচি। সিলেট সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা এ ধর্মঘটের কারণে সোমবার সকাল ৬টা থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। দূরপাল্লার যানবাহনের পাশাপাশি, সাধারণ যাত্রী পরিবহণগুলো চলাচলেও বাঁধা সৃষ্টি করে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সিলেটের।
পরিবহন শ্রমিকদের তান্ডব লীলায় বাদ পড়েনি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীরাও। সোমবার সকালে নগরীর বিভিন্নস্থানে পরীক্ষার্থী বহনকারী গাড়িও আটকে দেয় শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিবহন শ্রমিক নেতারা আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কৌশলে কর্মবিরতির নামে সকাল-সন্ধ্যা পরিবহন ধর্মঘট করেছে।
তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন-সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা সর্বস্তরের পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। সড়কে কোনো পিকেটিং হয়নি। কাউকেই হয়রানি করা হয়নি।
সরেজমিনে সোমবার নগরীর দক্ষিন সুরমা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার যানবাহনের পাশাপাশি, সাধারণ যাত্রী পরিবহণগুলো চলাচলেও বাঁধা সৃষ্টি করে পরিবহন শ্রমিকরা। তারা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের গাড়িও আটকে রাখে।
সাধারণ যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবার জন্য পায়ে হেটে রওয়ানা দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা সর্বস্তরের পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। সড়কে শ্রমিকদের পিকেটং সর্ম্পকে তিনি জানান, সড়কে কোনো পিকেটিং এখন পর্যন্ত হয়নি।
উদার পরিবহন নামের বাসের চালক জুয়েল ও সহকারী মাসুককে ‘হত্যা মামলা’ থেকে অব্যাহতিসহ ৭ দফা দাবি জানিয়ে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা সিলেট বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। গত শনিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে করে পরিবহন শ্রমিকদের এ কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।
পরিবহন শ্রমিকদের এ সাত দফা দাবি হচ্ছে- শেরপুরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার ধারা ৩০২ এর স্থলে ৩০৪ করতে হবে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ১০৫ ধারায় জরিমানা পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার করতে হবে।
এক জেলার গাড়ি অন্য জেলায় রিকুইজিশন করা যাবে না, সড়ক মহাসড়কে চেকিং এর নামে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে পুলিশি হয়রানি, কথায় কথায় পুলিশ কর্তৃক রং পার্কিং-এর নামে হয়রানি, রেকারিং-এর নামে পুলিশের চাঁদাবাজি ও সেতুতে টোল আদায় বন্ধ করতে হবে।